November 25, 2024
জাতীয়

ঢাকায় থাকবেন না আবরারের ভাই, চলে গেলেন কুষ্টিয়ায়

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছিলেন দুই ভাই আবরার ফাহাদ ও আবরার ফাইয়াজ; হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে বড় ভাই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেওয়ার পর এবার ঢাকাকে বিদায় জানালেন ছোট ভাই। ঢাকা কলেজের ছাত্র আবরার ফাইয়াজ মঙ্গলবার ওই কলেজ থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন। তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হবেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কারণ জানতে চাইলে ফাইয়াজের বাবা বরকত উল­াহ বলেন, দুই ছেলের একজন আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, এই অবস্থায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা জনিত অজানা শঙ্কা মাথায় নিয়ে জীবনযাপন আরও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তাহীনতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফাইয়াজের মা রোকেয়া খাতুনের একাকীত্ব। সব বিষয় ভেবে ওর মা এবং পরিবারের অন্যান্য স্বজনদের ইচ্ছায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল।

কুষ্টিয়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ব্র্যাককর্মী বরকতের বড় ছেলে আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিন বছর আগে তিনি বুয়েটে ভর্তি হন। কুষ্টিয়া থেকে এসে এবছরই ঢাকা কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন ফাইয়াজ।

গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের একদল কর্মী; যা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। এই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত চকবাজার থানায় ১৯ জনের নামে মামলা করেছেন। ওই মামলায় আসামিদের বেশিরভাগই গ্রেপ্তার হয়েছেন। সোমবার গণভবনে সাক্ষাৎ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।

ফাইয়াজের কলেজ স্থানান্তরের বিষয়ে তার বাবা বলেন, ও ছোট, ওকে দেখেশুনে আগলে রাখার জন্য বড় ভাই ছিল। যেখানে সেই চরম নৃশংসতার শিকার হল, সেখানে আর কার ভরসায় ওকে ঢাকায় রাখব?

আমি বিশ্বাস করি ফাইয়াজ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকেও পড়ালেখা করে ভালো রেজাল্ট করবে। সেই সাথে ওর মাকেও সঙ্গ দিতে পারবে। তাতে হয়ত আপাতত নতুন করে ফাইয়াজের জন্য ওর মা কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকবে।

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মনজুর কাদির বলেন, গত রোববার আবরার ফাইয়াজ কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তির আবেদন করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে তাকে ভর্তি নেওয়ার জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এখন অপেক্ষায় আছি ঢাকা কলেজ থেকে ছড়পত্রের কপি হাতে পেলেই ফাইয়াজের ভর্তির প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হবে।

ঢাকা কলেজের উপাধ্যক্ষ কেটিএম মাইনুল হোসেন জানান, এক বোর্ড থেকে আরেক বোর্ডে ছাড়পত্র নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদেরকে প্রথমে তার কলেজে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে সেটা বোর্ডে যায়। বোর্ড অনুমোদন দিলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দেয়। আবরার ফাইয়াজের আবেদন বোর্ডে গিয়েছিল। বোর্ড ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে। আমরা এখন ছাড়পত্র ইস্যু করছি।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *