ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে, দ্রুত হবে পৃথক ওয়ার্ড
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল শনিবার ২৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের তিনটি ওয়ার্ডে রেখে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, দ্রুত ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ওয়ার্ড করা হবে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু চিকিৎসার ফোকাল পারসন ফরহাদ হোসেন হিরা গতকাল বলেন, হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা সবাই ঢাকা বা অন্যান্য বড় শহর থেকে আক্রান্ত হয়ে এখানে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। তবে গতকাল ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একাধিক রোগী অন্তত গত এক বছরে ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে ভ্রমণের ইতিহাস নেই। ময়মনসিংহ নগরের আকুয়া চৌরঙ্গী মোড়, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা ও জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া রোগী পাওয়া গেছে।
১৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগী মনির হোসেন বলেন, ঈদের তিন দিন পর তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। কয়েক দিনের মধ্যে জ্বর না কমলে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। তিনি স্থায়ীভাবে ময়মনসিংহেরে আকুয়া চোরঙ্গী মোড় এলাকায় বসবাস করেন। এর মধ্যে তিনি ময়মনসিংহের বাইরে কোথাও যাননি।
সরিষাবাড়ীর মেহেদী হাসানও ঢাকা বা বড় কোনো শহরে না গিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। তাঁর স্ত্রী সানজিদা শারমিন বলেন, ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে অনেকেই ছুটিতে আসেন। তাঁদের মাধ্যমেও আক্রান্ত হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, এ বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট ১২৩ জন ডেঙ্গু রোগী এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে গত রোববার একজন এবং গত শুক্রবার রাতে আবদুর রাজ্জাক (৫০) নামের এক রোগী মারা যান। রাজ্জাকের বাড়ি গাজীপুরের মাওনা এলাকায়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়া সবাই ঢাকা বা আশপাশের জেলা থেকে আক্রান্ত হয়েছেন।
গতকাল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দেখা যায়, অন্য রোগীদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ডেঙ্গু রোগীরা। ডেঙ্গু রোগীদের মশারির ভেতর রাখা হয়েছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের সাধারণ মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। যে কারণে তাঁদের তিনটি মেডিসিন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। আমরা পৃথক ওয়ার্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছি। দ্রুতই পৃথক ওয়ার্ড চালু করা হবে।’
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মশার লার্ভা পাওয়া গেলেও এখনো এডিস মশার লার্ভা কোথাও পাওয়া যায়নি। সিটি করপোরেশনের খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক মজুমদার বলেন, ‘ডেঙ্গু সচেতনতা বাড়াতে আমরা সিটি করপোরেশনের প্রতিটি এলাকায় ব্যাপকভাবে মাইকিং করছি। বিভিন্ন এলাকায় অভিযানের মাধ্যমে মশার লার্ভা ধ্বংস করা হচ্ছে। আজ রোববার আবারও বিশেষ অভিযান শুরু হবে।’
দক্ষিণাঞ্চল অনলাইন ডেস্ক