ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার কিশোর-মুশতাক কারাগারে
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আহমেদ কবির কিশোর ও মুশতাক আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
কার্টুনিস্ট কিশোর রাজনৈতিক কার্টুন এঁকে থাকেন, আর ব্যবসায়ী মুশতাক অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয়।
র্যাব মঙ্গলবার রাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে রমনা থানায় হস্তান্তর করে।
পুলিশ দুজনকে বুধবার ঢাকার আদালতে হাজির করলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা বেগম।
র্যাবের করা এই মামলায় কিশোর ও মুশতাককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কোনো আবেদন পুলিশের পক্ষ থেকে করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের কর্মকর্তা এসআই প্রণয় কুমার সরকার ও নিজাম উদ্দিন ফকির জানান, রিমান্ডের আবেদন না থাকায় অভিযুক্তদের কোর্ট হাজত থেকে এজলাসে তোলা হয়নি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার এসআই জামশেদুল ইসলাম আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে বলেন, কার্টুনিস্ট কিশোর তার ‘আমি কিশোর’ নামের ফেইসবুক একাউন্টে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার পোস্ট করতেন। আর মুশতাক তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে কিশোরের সেসব পোস্টের কয়েকটি শেয়ার করেন।
তিনি দুজনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
অন্যদিকে কিশোর ও মুশতাকের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।
আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, কিশোর ও মুশতাক নির্দোষ। তারা সরকারবিরোধী কোনো স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেননি। কোনো গুজব ছড়াননি। তারা যে পোস্ট দিয়েছেন, তাতে গঠনমূলক সমালোচনা ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালত পুলিশের কর্মকর্তারা তার বিরোধিতায় বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। যেহেতু আসামিরা সদ্য ধৃত, সে কারণে তাদের কারাগারে পাঠানো হোক।
শুনানি শেষে হাকিম মাহমুদা বেগম জামিন আবেদন নাকচ করে দুজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার জাফর হোসেন জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার কিশোরকে কাকরাইলের এবং মুশতাককে লালমাটিয়ার বাসা থেকে র্যাব গ্রেপ্তার করে বলে জানান রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম।
রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, র্যাব-৩ এর ডিএডি আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। সেখানে কিশোর ও মুশতাকসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার এএসপি আবু জাফর মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ বলেন, “তারা দুজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকাবিরোধী প্রচারণা, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছিলেন।”
মামলার বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে এই র্যাব কর্মকর্তা জানান।