ডিআইজি মিজান ও তার ভাগ্নের জামিন নামঞ্জুর
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমান ও তার ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন। আদালতে ডিআইজি মিজানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এহসানুল হক সমাজী।
আর তার ভাগ্নে কোতয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসানের পক্ষে আব্দুর রহমান হাওলাদার আদালতে জামিন আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসের কাজল ও মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানিকালে ডিআইজি মিজান ও তার ভাগ্নেকে আদালতে হাজির করা হয়।
এদিকে মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু দুদক প্রতিবেদন দাখিল না করায় একই বিচারক আগামী ২ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ ধার্য করেছেন। গত ২ জুলাই আদালত এ মামলায় তার জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে ১ জুলাই হাইকোর্টে তার জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত তা খারিজ করে কাস্টডিতে নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
গত ২০ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) পরিচালক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই আদালত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দিয়েছিলেন।
ডিআইজি মিজানের বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- বেইলি রিটজ ভবনের চতুর্থ তলায় ৫৫ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট, কার পার্কিং স্পেসসহ ৫৫ দশমিক ৫১ অযুতাংশ জমি, কাকরাইলে ২ কোটি ২০ লাখ টাকার একটি বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট, দোকান ও জমি। এসব সম্পত্তির মোট মূল্য ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৬০ টাকা। এছাড়া ধানমন্ডি সিটি ব্যাংকের হিসাবে রয়েছে ১০ লাখ টাকা।
বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তি যেন হস্তান্তর, বিক্রি বা মালিকানা স্বত্ত¡ বদল করতে না পারে, সেজন্য ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রারের নিবন্ধন পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, তেজগাঁও শিল্প এলাকার ঢাকা রেজিস্ট্রার কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার এবং ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, গুলশান, সাভার ও উত্তরার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ১২ জুন পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক মঞ্জুর মোরর্শেদকেদায়িত্ব দেওয়া হয়। ঘুষগ্রহণ ও তথ্য পাচারের অভিযোগে আগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœা, ছোটভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে পুলিশের কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়েছে।
মিজান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকার সময় বিয়ে গোপন করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এ ঘটনায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।