ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রীসহ স্বজনদের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই সঙ্গে দুদকের এক পরিচালককে ৪০ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিজানকে তলব করেছে দুদক।
গতকাল সোমবার কমিশনের সভায় অনুমোদনের পর পরিচালক মনজুর মোরশেদ বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা -১ এ মামলাটি দায়ের করেন বলে দুদকের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সম্পদের তথ্য গোপন এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœা, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান এবং ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে। দুদকের নিজস্ব অফিসে এটি প্রথম মামলা। আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি সাত লাখ ৫ হাজার ২১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এহাজারে বলা হয়, আসামি মিজানুর রহমান অবৈধ অর্থ দিয়ে বিভিন্ন সময়ে তার নিকট আত্মীয় স্বজনের নামে বিভিন্ন সম্পদ ক্রয় করে কৌশলে নিজেই ভোগ দখল করে আসছেন।
দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা : সোমবার দুপুরে মামলা করার পর পর ডিআইজি মিজানসহ চার আসামির বিদেশে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক। আসামিরা যাতে বিদেশ যেতে না পারেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইমিগ্রেশন পুলিশের বিশেষ সুপারের বরাবর চিঠি দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদ। আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সন্দেহ থেকে তদন্ত কর্মকর্তা চিঠিতে এই অনুরোধ জানান।
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ : দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিআইজি মিজানকে ১ জুলাই দুদক কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ওই দিন সকাল ১০টায় তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যার কার্যালয়ে হাজির থাকতে সোমবার নোটিস পাঠানো হয়েছে।
একই অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদে দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে একই দিন দুপুর ২টায় তলব করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এছাড়া ঘুষ লেনদেনের সংবাদ প্রচার করা বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার ইমরান হোসেন সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদেন জন্য ২৬ জুন তলব করেছে দুদক।
গত ৯ জুন টেলিভিশনে ডিআইজি মিজান দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা বাছির তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। দাবির সপক্ষে দুজনের মধ্যে ‘কথোপকথনের’ কয়েকটি অডিও ক্লিপ সংবাদমাধ্যমকে দেন তিনি। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পরদিন তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি বাছিরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে দুদক।
১১ জুন মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই কমিটি রোববার অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দিলে সোমবার মামলার অনুমোদন দেয় কমিশন।