ডায়াবেটিস মোকাবিলায় দারচিনি
দারচিনি রান্নায় ব্যবহৃত সব থেকে পরিচিত মশলার মধ্যে অন্যতম। শুধুমাত্র স্বাদ বা গন্ধের জন্য নয়, বিভিন্ন ওষুধ সম্বন্ধীয় বৈশিষ্ট্যের জন্যেও দারচিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
‘সিনামালডিহাইড’ খাবারের গন্ধ ছাড়াও বিভিন্ন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ক্ষেত্রে কার্যকরী হয়ে ওঠে। ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে দারচিনি। এছাড়াও অ্যান্টি–অক্সিডান্ট হিসেবেও দারচিনি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
দারচিনির পুষ্টিগুণ
এক চামচ দারচিনিতে সাধারণত যা যা পুষ্টিকর উপাদান থাকে, তা হলো-
ক্যালরি– ৬.৪২
কার্বোহাইড্রেট– ২.১ গ্রাম
ক্যালসিয়াম– ২৬.১ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম– ১.৫৬ মিলিগ্রাম
ফসফরাস– ১১.২ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম– ১১.২ মিলিগ্রাম
এছাড়াও কোলাইন, লাইকোপেনের মতো বিভিন্ন অ্যান্টি–অক্সিডান্ট যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায় দারচিনিতে।
দারচিনির ধরন
মূলত দু ধরনের দারচিনি হয়:
১. সেইলন দারচিনি
২. চাইনিজ বা ক্যাশিয়া দারচিনি
বলা হয়, সেইলন দারচিনি চাইনিজ দারচিনির থেকে অনেক বেশি কার্যকরী। নাম শুনেই বোঝা যায়, সেইলন দারচিনি শ্রীলঙ্কায় উদ্ভব, আর মূলত দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলেই পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে দারচিনির কার্যকারিতা
আয়ুর্বেদিক ওষুধপত্র বা চিকিৎসার ক্ষেত্রে দারচিনি বহুকাল ধরেই রক্তে বাড়তি শর্করার মাত্রা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। সম্প্রতিকালে দেখা গেছে যে, ৪০ দিন ধরে প্রতিদিন ৬ গ্রাম দারচিনি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকতে পারে। এর সঙ্গে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর ক্ষেত্রেও দারচিনি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
দারচিনির অন্যান্য উপকারিতা
শুধুমাত্র ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন পেটের সমস্যার ক্ষেত্রেও দারচিনি গুরুত্বপূর্ণ। ডায়রিয়া মোকাবিলায়ও দারচিনি নিয়মিত ব্যবহার করা হয়। দারচিনির ছাল অনেক সময়ে দাঁতের যন্ত্রণায় বা জয়েন্টের ব্যথার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
দারচিনির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
বেশি মাত্রায় দারচিনি সেবন লিভারের ক্ষতি করতে পারে। কেউ যদি রক্ত তরল করার ওষুধ নিয়মিত খায় বা কাউকে যদি ডায়াবেটিসের মোকাবিলা করার জন্য নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়, তাহলে তাদের জন্য বেশি মাত্রায় দারচিনি না খাওয়াই ভালো।