ডাস্টবিনে পাওয়া নবজাতকের পরিচয় খুঁজতে গিয়ে গ্রেফতার চার ধর্ষক
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাস্টবিন থেকে উদ্ধারকৃত নবজাতক পেল তার মায়ের কোল। গত বুধবার ডাস্টবিন থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। এ ঘটনায় চার বন্ধুকে শুক্রবার পুলিশ গ্রেফতার করে রংপুর আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ধর্ষকরা হলো পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়া গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আরিফুল ইসলাম (১৯), সরলা চান্দেরপাড়া গ্রামের মৃত বিমল চন্দ্র সরকারের ছেলে তাপস সরকার (২৮), ধনশালা গ্রামের হিন্দুপাড়ার সুবল চন্দ্র রায়ের ছেলে সঞ্জিত কুমার রায় (২০) ও গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বড় দাউদপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে রাহেল সরকার (৩২)।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা স্থানীয় একটি শো-রুমের কর্মচারী ও মেকানিক। একে-অপরের বন্ধু তারা। মোবাইলের মাধ্যমে পীরগঞ্জ উপজেলার এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সস্পর্ক গড়ে উঠে উপজেলা সদরের একটি মোটরসাইকেল সার্ভিসিং সেন্টারে কর্মরত রাহেল সরকারের। সেই সুবাদে গত বছরের ২৯ জুন পীরগঞ্জ থানা সদরের ওই মোটরসাইকেলের সার্ভিসিং সেন্টারের ভেতরে পরিকল্পিতভাবে রাহেলসহ আরও তিন বন্ধু ওই মেয়েটিকে পর্যায় ক্রমে গণধর্ষণ করে। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয় ওই মেয়ে। গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে প্রসব ব্যথা শুরু হলে অপরিচিত ভ্যানযোগে পীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে যায় ওই কিশোরী। সেখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ রোগী ও তার সন্তানের বাবার পরিচয় জানতে চাওয়ায় ভ্যানচালক চলে যায়। এ অবস্থায় প্রসব ব্যথায় কাউকে কিছু না বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দোতলায় ওঠার সময় সন্তান প্রসব করে মেয়েটি। তখন কাউকে কিছু না জানিয়ে নবজাতককে ডাস্টবিনে ফেলে পালিয়ে যায়। বুধবার পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাস্টবিন থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ওই নবজাতককে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
পীরগঞ্জ থানা পুলিশ খবর পেয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধারের পর নবজাতককে তার কাছে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নবজাতক ও তার মাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি সরেস চন্দ্র সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় আরিফুলকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করতে গিয়ে অন্য ধর্ষকদের সন্ধান পায় পুলিশ। তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। তাদের গণধর্ষণের ফলে এই নবজাতকের জন্ম হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।