ডাকসু: ৬ দফা দাবিতে উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও
দক্ষিণাঞ্চল ডেক্স
আবাসিক হলের বদলে একাডেমিক ভবনে ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র করাসহ ছয় দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও করেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো।
সোমবার বেলা পৌনে ১টার দিকে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর দুই মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য এ ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করে।
এর আগে সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্য কার্যালয়ে আসেন আন্দোলনকারীরা।
বয়সের সীমা বাদ দিয়ে ‘যারা ডাকসুর ফি দেয়’- এরকম সবাইকে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি রয়েছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর।
পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষে প্রচারের সুযোগ দেওয়া, হলে সন্ত্রাস বন্ধ করা এবং বৈধ ছাত্রদের মেধার ভিত্তিতে আসন বণ্টন, ডাকসুর সাবেক নেতাদেরও প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাদের ছয় দফার মধ্যে।
ঘেরাও কর্মসূচির শুরুতে প্রগতিশলী ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ইকবাল কবীর বলেন, অধিকাংশ ছাত্র সংগঠনের প্রত্যাশার বিরুদ্ধে গিয়ে কেবল ছাত্রলীগের দাবি অনুযায়ী হলে ভোটকেন্দ্র রেখেছে প্রশাসন।
“অন্য ছাত্র সংগঠনের কোনো দাবি না মেনে কেবল ছাত্রলীগ যা যা বলছে, তারা তাই তাই করেছে। যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বসেছিল, ছাত্রলীগ কি বলে তা মেনে নেওয়ার জন্য।”
নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য ঘেরাও কর্মসূচির পর আরও কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল।
গত কয়েকদিনের মত সোমবারও মধুর ক্যান্টিনে আসে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের পাশাপাশি অবস্থানে সরগরম ছিল পুরো এলাকা।
দুপুরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার সময় থাকলেও তারা সেটা করছেন না। ক্যাম্পাসে ও হলে সহাবস্থানসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ অপেক্ষা করবেন তারা।
“আমরা আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৮ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা যাবে। ভোট হবে আগামী ১১ মার্চ।
বাম দলগুলো যখন উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও কর্মসুচি পালন করছিল, সরকার সমর্থক সংগঠন ছাত্রলীগ তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারকে আধুনিক ও বহুতল কমপ্লেক্সের রূপ দেওয়ার দাবিতে গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করে।
ক্যাম্পাসে ও হলে সহাবস্থান নিশ্চিত করার স্বার্থে ডাকসু নির্বাচন ১৫ দিন পেছানোর দাবি জানিয়েছে জাসদ ছাত্রলীগের একাংশ।
সোমবার মধুর ক্যান্টিনের সামনে ডাকসু নির্বাচনে সংগঠনের প্যানেল ঘোষণার পাশাপাশি এ দাবি জানান তারা।
বিএনপি সমর্থক জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের দাবিতে নির্বাচন তিন মাস পেছানোর দাবি জানিয়ে আসছে।
জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি শাহজাহান আলী সাজু সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “মধুর ক্যান্টিনের মত ক্যাম্পাসে ও হলগুলোতে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমপক্ষে ১৫ দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক।”
ছাত্রলীগ নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের বাইরে গিয়ে আলাদা প্যানেল ঘোষণা করেন বাংলাদেশ জাসদ সমর্থক সংগঠনটির এই নেতা।
২৫ সদস্যের প্যানেলে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহফুজুর রহমান রাহাতকে ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রহমান বিজয়কে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী করা হয়েছে।