ডাকসু ভিপি নুরের উপর বগুড়ায় হামলা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূরের উপর বগুড়ায় ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আমন্ত্রণে বগুড়ায় ইফতার অনুষ্ঠানে এসে রোববার বিকালে হামলার মুখে পড়ে তিনি অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে ঢাকা ফিরে যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইফতার পার্টিতে যেতে বাধা দেওয়ার একদিন পর এ ঘটনা ঘটল।
সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বগুড়ার আহŸায়ক রাকিবুল আহসান বলেন, শহরের উডবার্ণ সরকারি গণগ্রন্থাগারে আমাদের ইফতার ও দোয়া মাহফিল ছিল। সেখানে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় নূরসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তবে ছাত্রলীগ হাতাহাতির কথা বললেও হামলার কথা অস্বীকার করেছে।
এ ঘটনায় নূরসহ চারজনকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলেছেন মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রোকাইয়া আক্তার।
রোকাইয়া আক্তার বলেন, আমরা নূর, তপন, রাতুল ও ফারুককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। পরে নূর ও রাতুলকে ভর্তি হতে বললেও তারা নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে ভর্তি না হয়ে ঢাকা চলে যান।
এ ব্যাপারে জানতে নূরের মোবাইলে ফোন দিলে তার সঙ্গে থাকা রুবেল ফোন ধরে বলেন, নূর আহত; তার মুখ থেকে রক্ত পড়ছে। আমরা বগুড়ায় নিরাপদ নই। তাই ঢাকা চলে যাচ্ছি।
সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বগুড়ার আহŸায়ক রাকিবুল আহসান বলেন, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহŸানে নূরসহ কয়েকজন একটি মাইক্রোবাসে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বগুড়া আসেন। শহরের উডবার্ণ সরকারি গণগ্রন্থাগারে ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল।
রাকিব বলেন, গাড়ি থেকে নেমে তারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভেতরে ঢোকার পর পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে স্থানীয় ও কেন্দ্রের নেতাকর্মীসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে তাদের মোহাম্মদ আলী মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে রাকিব জানান।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস বলেন, পাশে আমাদের একটি ইফতার পার্টি চলছিল। আমরা জানতে পারি সেখানে শিবিরের নেতাকর্মীরা রয়েছে। তাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে জিজ্ঞেস করে কেন শিবিরের লোকজন নিয়ে অনুষ্ঠান করছেন।
তখন তিনি বলেন, ‘আমরা কাকে নিয়ে অনুষ্ঠান করব সেটা আমাদের ব্যাপার, আপনারা বলার কে?’ এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয়।
শনিবার একটি ইফতার অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া গিয়ে বাধার মুখে পড়েন নূর। ওই সময় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেসকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আগের একটি স্টেশনে প্রায় এক ঘণ্টা থামিয়ে রাখা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের গ্রান্ড এ মালেক চাইনিজ রেস্টুন্টে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা। সেখানেই প্রধান অতিথি করা হয়েছিল ডাকসুর ভিপি নূরকে। ওই ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উদ্দেশে চট্টলা এক্সপ্রেসে চড়েছিলেন নূর।
পরে পুলিশের পাহারায় ওই রেস্তোরাঁর সামনের খোলা জায়গায় নূর তার সহযোগীদের নিয়ে ইফতার সারেন; এবং সন্ধ্যায় মহানগর গোধূলীতে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন।