ডাঁটাশাকে লাখপতি ডুমুরিয়ার হানিফ মোড়ল
ডুমুরিয়া প্রতিনিধি
বৈশাখের প্রকৃতি খর¯্রােতা নদীর মত চারিদিকে হাহা করছে, তারই মাঝে ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া হানিফ মোড়লের ক্ষেতে মনে হচ্ছে প্রকৃতি বিছিয়ে দিয়েছে সবুজ গালিচা। মৃদুমন্দ বাতাসে দুলছে, একটির সাথে আর একটি কানে কানে ফুসফুস করে বলছে যেন কোন গোপন কথা। হ্যাঁ, ডাঁটাশাকের কথা বলছি- এই গরমে ডাঁটাশাক একটা অতি প্রয়োজনীয় সবজি, কখনও চিংড়ি মাছ দিয়ে ভাজি বা শোল মাছ দিয়ে ঝোল জিভে জল এসে যায়। কেবলমাত্র রুচিকর সবজি নয়। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ ও রিবোফ্লাভিন আছে। এটি মানুষের ত্বক ও চুলকে সুন্দর করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে, মানুষের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এর পাতার রস চুলকানি এবং খোসপাঁচড়া সারায়। এই গরমে মানুষের ফোড়া বা বাগি বের হয়, এটি নিয়ন্ত্রণে ডাটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। মাত্র ৪০-৪৫ দিনে এটা কর্তনের উপযোগী হয়। একজন মানুষ একবিঘা জমিতে ৪-৫ হাজার টাকা খরচ করে মাত্র ৪০-৪৫ দিনে ৪০-৫০ হাজার টাকা লাভ করতে পারে। একই শস্য বিন্যাসে লালশাক-ডাটাশাক মিলিয়ে প্রায় ৮-১০ বার ফসল নেওয়া যায়, যা অন্য ফসলের তুলনায় ৪/৫ গুন লাভ পাওয়া যায়।
খর্নিয়ার কৃষক হানিফ মোড়ল বলেন, ৭০ শতক জমিতে এবছর ডাঁটাশাক লাগিয়েছি, সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ১২০০০ টাকা মাত্র ৪৫ দিনে এটি ৯৬ হাজার টাকা বিক্রয় করেছি, এটি অত্যন্ত লাভজনক। তিনি আরও বলেন, এই জমি হতে এর আগে ৭ বার লালশাক নিয়েছি এবং প্রায় একলাখ টাকা বিক্রয় করেছি, এই সিস্টেম অনেক লাভজনক।
একই গ্রামের অপর একজন কৃষক আঃ সাত্তার মোড়ল বলেন, আমিও একবিঘা জমিতে এবার ডাটা লাগিয়েছি, ক্ষেতের অবস্থা খুবই সুন্দর, আশা করছি ভাল মূল্য পাব।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, হানিফ মোড়ল তিনবার বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক পাওয়া কৃষক, তাকে এগিয়ে নেওয়ায় জন্য তাকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী দিচ্ছি এবং মাঠে গিয়ে তাকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে হলে কৃষির বানিজ্যিকীকরন প্রয়োজন এবং কৃষিতে নতুন নতুন তরুণ উদ্যক্তা প্রয়োজন। এ উপজেলায় এ বছর ২০ হেঃ জমিতে ডাঁটাশাকের আবাদ হয়েছে, ফলনও ভাল। আমরা হানিফ মোড়লের মত উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছি।