টয়োফিড কোম্পানীর চেক প্রতারণার ফাঁদে বাগেরহাটের দুই ব্যবসায়ী
বাগেরহাট প্রতিনিধি
মুরগী ও মাছের খাবার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান টয়োফিড লিঃ (ডিজি ফিড) কোম্পানীর কর্মকর্তাদের চেক প্রতারনায় সর্বশান্ত হতে চলেছে বাগেরহাটের দুই মুরগী খাদ্য ব্যবসায়ী। প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ব্যবসা বানিজ্য গুটিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরছে ব্যবসায়ীরা। প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর আবেদন করেছেন ওই দুই ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগে জানাগেছে, টয়োফিড লিঃ এর সাথে ২০১৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ডিলার হিসেবে চুক্তি সম্পাদন করে ব্যবসা শুরু করেণ বাগেরহাটের দুই ব্যবসায়ী। এরা হলেন, মোরেলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটি বাজারের মেসার্স নিউ পোল্ট্রি ফিড এর মালিক নিত্যানন্দ সাহা এবং সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের এস আর পোল্ট্রি ফিড এ্যান্ড ফিসারিজের মালিক সরদার জাহিদুল ইসলাম। ব্যবসা শুরুর সময় টয়োফিড লিঃ এর সাথে নিত্যানন্দ সাহা ও সরদার জাহিদুল ইসলাম এর একটি লিখিত চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী নিত্যানন্দ টয়োফিড লিঃ এর কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা এবং সরদার জাহিদুল ইসলাম ২৫ লক্ষ টাকার খাদ্য ধাপে ধাপে বাকিতে ক্রয় করতে পারবেন। এ চুক্তির সময় নিত্যানন্দের কাছ থেকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ এ তার নিজ নামের ৩টি বøাঙ্ক চেক এবং জাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে তার ব্রাক ব্যাংকে তার নিজ নামের ২টি বøাঙ্ক চেক নেয় টয়োফিড লিঃ এর কর্মকর্তারা। শুরু হয় তাদের সাথে ব্যবসা। ২০১৮ সালের মে ও জুন মাসের দিকে টয়োফিড লিঃ এর ডিজিফিড নামক যে মুরগির খাবার নি¤œমানের হওয়ায় ডিলারদের আওতাভুক্ত খামারীদের অনেক মুরগি মারা যায়। এবিষয়টি ডিলাররা কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার সেলিম মাহমুদকে জানালে তারা কোম্পানির পক্ষ থেকে খামারিদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন। এরপর প্রতিশ্রæতি ভঙ্গ করে উল্টো ওই দুই ব্যবসায়ীর দেয়া বøাঙ্ক চেকে অতিরিক্ত টাকার অঙ্ক বসিয়ে চেক ডিজঅনার করে তাদের নামে কোম্পানির পক্ষ থেকে উকিল নোটিশ পাঠায়।
মেসার্স নিউ পোল্ট্রি ফিড এর মালিক নিত্যানন্দ সাহা বলেন, নি¤œমানের খাবার সরবরাহের কারণে খামারিদের মুরগি মারা যাওয়ার বিষয়টি ডিজি ফিডকে অবহিত করি। পরে তারা আমাদের খামার পরিদর্শণ করে খামারিদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দেন এবং কোম্পানির সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য কোথাও জানাতে নিষেধ করেন। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপন করতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে আমার দেয়া বøাঙ্ক চেকে ৩৫ লক্ষ টাকা লিখে, ব্যাংকে চেক ডিজঅনার করিয়ে ২০১৮ সালের ২২ নভেম্বর আমাকে একটি উকিল নোটিশ দেয়। আমি উকিল নোটিশের জবাব পাঠালেও তারা আমার নোটিশ রিসিভ করেনি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার সেলিম আমাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। খামারিদের ক্ষতিপূরণ ও চেক ডিজঅনার করে অযথা হয়রাণির হাত থেকে মুক্তি পেতে টয়োফিড কোম্পানির মালিক ও সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন এ ব্যবসায়ী।
এস আর পোল্ট্রি ফিড এ্যান্ড ফিসারিজের মালিক সরদার জাহিদুল ইসলাম জানান, ব্যবসায়িক চুক্তির সময় আমার সাথে ২৫ লক্ষ টাকার বাকি দেয়ার চুক্তি হয়। কিন্তু তাদের নি¤œ মানের খাবার সরবরাহে খামারিদের মুরগি মারা যাওয়ার পরে কোম্পানির সাথে আমাদের ব্যবসায়িক সমস্য সৃষ্টি হয়। তখন তারা আমার দেয়া বøাঙ্ক চেকে ৮১ লক্ষ টাকা বসিয়ে, চেক ডিজঅনার করায়। পরবর্তীতে আমাকে উকিল নোটিশ পাঠায়। আমার ব্যবসা বাচিয়ে রাখতে মিথ্যা হয়রানি থেকে বাচার জন্য সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
টয়োফিড কোম্পানির খুলনা অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার সেলিম মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যবসায়ীদের কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতে বলেন।