ট্রলারডুবি: ১৯ দালালের বিরুদ্ধে মামলা, আরও এক রোহিঙ্গা উদ্ধার
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সাগরপথে রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়ায় পাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মামলা করেছে কোস্টগার্ড। মঙ্গলবার রাতে সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ড কন্টিনজেন্টের কর্মকর্তা এম এস ইসলামের দায়ের করা এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিনের কাছে সাগরে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ট্রলারডুবির ঘটনায় জীবিত অবস্থায় উদ্ধার চারজনসহ মোট ৮ জন ‘দালালকে’ এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে ট্রলারডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়া চারজনকেও এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন রোহিঙ্গা, বাকি ৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
গ্রেপ্তার আসামিদের বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ট্রলারডুবির ঘটনায় অন্য যাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, তাদেরও আদালতে হাজির করবে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোস্টগার্ডের সেন্ট মার্টিন স্টেশনের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাঈম-উল হক জানান, বুধবার ভোর রাতে সেন্ট মার্টিনের কাছে সাগর থেকে আরও এক রোহিঙ্গাকে অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সেন্ট মার্টিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে তাকে টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কোস্ট গার্ড।
মঙ্গলবার ভোর রাতে সেন্ট মার্টিনের কাছে সাগরে অবৈধভাবে মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গাদের ট্রলারডুবির ঘটনায় এ নিয়ে মোট ৭৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হল। স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় কোস্ট গার্ড ও নৌ-বাহিনীর সদস্যরা মঙ্গলবারই চার শিশু ও ১১ নারীর লাশ উদ্ধার করে। বুধবার নতুন করে আর কারও লাশ পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কক্সবাজারের নোয়াখালীয়াপাড়া থেকে দুটি ট্রলার ছেড়ে যায় সোমবার গভীর রাতে। এর মধ্যে একটি ট্রলার ভোর পৌনে ৬টার দিকে সাগরে দুর্ঘটনায় পড়ে ডুবতে শুরু করে। খবর পেয়ে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। পরে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারও যোগ দেয়।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাঈম-উল হক জানান, দুর্ঘটনায় পড়া ট্রলারে সব মিলিয়ে মোট ১৩৮ জন আরোহী ছিলেন। নিখোঁজদের উদ্ধারে বুধবার সকাল থেকে ওই এলাকায় দ্বিতীয় দিনের মত উদ্ধার অভিযান চলছে।