জ্বালানি সংকটে বন্ধ হতে পারে কল-কারখানা
জ্বালানি সংকটের কারণে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি দেশের অন্যতম রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প। চলমান বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের দৈন্য দশায় কারখানা মালিকরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ছেন।
খুব দ্রুত এ সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া না গেলে যেকোনো সময় কারখানাগুলো বন্ধ করে দিতে হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জেই কর্মহীন হয়ে পড়তে পারেন কয়েক লাখ শ্রমিক। এমন আশঙ্কার কথা বলেছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জে গ্যাসের চাপ একেবারেই কমে গেছে। কোথাও কোথাও দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকছে না। দীর্ঘ সময় ধরে হচ্ছে লোডশেডিং। গার্মেন্টস মালিকরা জানান, বেশিরভাগ সময়ই কারখানাগুলোয় গ্যাসের চাপ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে উৎপাদন নেমে এসেছে ৪০-৬০ শতাংশে।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বেশি দামে জ্বালানি কিনে জেনারেটরের মাধ্যমে কারখানাগুলো সচল রাখতে হচ্ছে। এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে মালিকদের। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে যেকোনো মুহূর্তে ভয়াবহ সংকট দেখা দিতে পারে এ সেক্টরে।
তৈরি পোশাক কারখানার ক্ষেত্রে বিদ্যুতের চেয়েও গ্যাসের সংকটের কারণে বেশি লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছে কারখানাগুলো।
এ বিষয়ে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমার প্রায় ছত্রিশ বছরের ক্যারিয়ারে এবারের মতো সংকটের মুখোমুখি হইনি। আমরা কতটুকু অর্ডার নেব বুঝতে পারছি না। অর্ডার নিয়ে যদি দিতে না পারি তখন উল্টো জরিমানার সম্মুখীন হতে হবে। গত দুই মাসে আড়াইশ শ্রমিক ছাটাই করেছি আমরা। কারণ, কাজ নেই। তাদের বসিয়ে রেখে টাকা দেওয়া সম্ভব না। প্রায় সব ফ্যাক্টরিতেই একই অবস্থা। আবার শ্রমিকদের বেতনও আমরা সময়মত দিতে পারছি না।
হাতেম বলেন, আমাদের এক্সপোর্ট নেই। বেতন দিতে পারছি না। গ্যাস সংকটের কারণে অর্ডার কমপ্লিট করতে পারছি না। এ ধরনের সংকট অতীতে কখনও দেখিনি। আমার নিজের ফ্যাক্টরি কখন বন্ধ করে দিতে হয় সেটাই ভাবছি।
বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি আরও বলেন, সরকারের উপরের লেভেলে আমরা যাদের সাথে কথা বলছি ঘটনাটা যে কি হতে যাচ্ছে তারা হয়ত এটা রিয়েলাইজ করতে পারছে না। আমরা বলছি, তারা এটা বুঝতে পারছে না। বুঝলে তারা কিছু একটা করতেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে ডলার খরচ করে এলএমজি আমদানির মাধ্যমে সরকারের উচিত পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখা। এটি বাস্তবায়িত হলে প্রস্তুতকৃত পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে কয়েকগুণ বেশি ডলার আয় করা সম্ভব হবে।