জেলা হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ প্রকল্পের অগ্রগতি কী : হাই কোর্ট
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দেশের সকল জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ শয্যার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ও করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থাপন প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নুর উস সাদিক। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বশির আহমেদ।
গত ২১ মে আদালত আইসিইউ-সিসিইউর হালনাগাদ তালিকা চেয়েছিল। ২৬ জুনের মধ্যে সে তালিকা দেওয়ার কথা থাকলেও গত ২৯ জুলাই সে তালিকা দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আমিনুল হাসান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৪৭টি জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ বেডের আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের কাজ চলছে। আর ১৭টি হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আদালতকে জানায়, প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে ৩০ বেডের আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপনের মত জায়গা আছে কিনা এবং প্রয়োজনীয় জনবল আছে কিনা তার তথ্য নেওয়া হচ্ছে। যেখানে জায়গা ও জনবলের সঙ্কট আছে, সেখানে প্রয়োজনীয় জায়গা তৈরি ও জনবল পদায়নের উদ্যেগ নেওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি প্রয়োজন এবং অগ্রাধিকার বিবেচনায় যন্ত্রপাতি সরবরাহের পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়। যেসব জেলা সদর হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউর কার্যক্রম চালু আছে, তার একটি তালিকাও আদালতে দিয়েছে স্বাস্থ্য অদিদপ্তর।
সেখানে বলা হয়, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ ও ৩০টি সিসিইউ বেড চালু আছে। নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে আইসিইউ বেড না থাকলেও সিসিইউ বেড আছে দুটি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ বেড নেই, ১৫টি সিসিইউ বেড আছে। পাবনা জেলা সদর হাসপতালে চারটি আইসিইউ ও আটি সিসিইউ বেড আছে। ভোলা সদর হাসপাতালে সিসিইউ বেড আছে চারটি।
এছাড়া কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্চ, মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, জামালপুর, রাঙামাটি, নেত্রকোনা, নওগাঁ, মাগুরা, চাঁদপুর এবং হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ-সিসিইউ বেড চালুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
হিউম্যান রাইটস লইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম গত বছরের জুলাইয়ে এ বিষয়ে একটি রিট করেন। পরে ওই বছরের ২৪ জুলাই হাই কোর্ট সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ল্যাবেরেটরি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষার মূল্য তালিকা এবং ফি (উন্মুক্ত স্থানে) পাবলিক প্লেসে প্রদর্শনের নির্দেশ দেয়।
এছাড়া ১৯৮২ সালের ‘মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স’ অনুযায়ী নীতিমালা তৈরি এবং তা বাস্তবায়নের জন্য আদেশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে বলা হয়। সেই সঙ্গে রুলও জারি করে হাই কোর্ট।
পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আদেশ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেয় আদালতে। আদালত তখন দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে কতগুলো ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) আছে, তার একটি পরিসংখ্যান দিতে বলে।
সেই সঙ্গে আদালত একটি আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট স্থাপনে কত টাকা খরচ হয়, কী পরিমাণ লোকবল ও বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন, সে বিষয়েও প্রতিবেদন দিতে বলে।
গত ২১ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ) পরিচালক মো. আমিনুল হাসান আদালতে সে প্রতিবেদন দেন। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে কতগুলো ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ও করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) আছে, তার একটি তালিকাও তিনি দেন।
এরপর আদালত ২৬ জুনের মধ্যে আইসিইউ ও সিসিইউর হালনাগাদ তালিকা চায়। সে তালিকা গত ২৯ জুলাই দাখিল করলেও বৃহস্পতিবার তা আদালতে উপস্থাপন করা হয়।