জেলা-উপজেলায় সিনেমা হল নির্মাণ করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রতিটি জেলা-উপজেলায় আবারও সিনেমা হল নির্মাণ করতে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সরকার এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নবনির্মিত আটটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সিনেমা আমাদের দেশের মানুষের বিনোদনের একটা অবলম্বন ছিল। যেটা পর্যায়ক্রমিকভাবে, আসলে প্রযুক্তির কারণেও এটা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আমি মনে করি, আমাদের প্রতিটি জেলায় এবং উপজেলায় আবার সিনেমা হলগুলো তৈরি করা উচিত। ’
‘সিনেমা হলের সঙ্গে সিনেপ্লেক্স ও শপিংমলসহ সবকিছুই করতে পারেন। পুরনো যেই সিনেমা হলগুলো ভেঙে নতুনভাবে আবার তৈরি করে মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে পারেন। ’
সিনেমা হল নির্মাণে সহযোগিতার জন্য সরকার এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা পুরনো সিনেমা হলগুলো ভেঙে নতুন সিনেমা হল তৈরি করবেন তারা এখান থেকে বরাদ্দ পাবেন এবং আরও নতুন নতুন সিনেমা হল যারা করতে চাইবেন তাদেরকেও এখান থেকে টাকা দেওয়া হবে। ’
‘কাজেই আমি আশা করি যে, আমাদের সিনেমা শিল্পটাকে আরও উন্নত করা এবং বাঁচিয়ে রাখার জন্য এটা একান্তভাবে দরকার। এফডিসি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে তৈরি করা। কাজেই আমাদের শিল্প বিকাশটা চতুর্মুখী হোক সেটা চাই। ’
প্রতিটি উপজেলা কালচারাল কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যটা হচ্ছে আমাদের প্রতিটি উপজেলায় অর্থাৎ ৪৯৩টি উপজেলায়ই আমরা আমাদের কালচারাল কমপ্লেক্স গড়ে তুলবো। প্রত্যেকটা উপজেলা থেকেই যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা মেধা বিকাশের সুযোগ পায়। সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিতে চাচ্ছি। আমরা উপজেলা পর্যায়ে নির্মিতব্য সংস্কৃতিক কেন্দ্রে ৪শ আসনের মিলনায়তনসহ মাল্টিপারপাস হল থাকবে। সেই হলগুলো এমনভাবে তৈরি করতে হবে। যেখানে চলচ্চিত্রও যেন দেখানো যায়। আমরা সেভাবে করতে চাই। ’
‘কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রকল্পগুলো তৈরি করা এবং সেগুলো প্রতিষ্ঠা করা। যাতে করে সেখানে এখন তো শুধু মানে ফিচার ফিল্ম হয় না, শর্টফিল্ম হয়, অন্যান্য ছোট ছোট সিনেমাগুলো হয়, স্বল্প দৈর্ঘ্যের সিনেমা হয় সেগুলো যেন এখানে দেখানো যায়। ’
লোকজ সংস্কৃতির বিকশিত করতে সংশ্লিষ্টদের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা হলো আমাদের বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন জেলায় জেলা ও এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের কিন্তু সংস্কৃতি রয়েছে। সেখানকার গান, যাত্রাগান, কবিগান, শিল্প,সাহিত্য বিভিন্ন কিছু আছে যা বিকশিত হতে পারে। এই যে লোকজ সংগীত ও লোকজ সাহিত্যে এগুলো যেন আরও বিকশিত হয় সেদিকেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো আমাদের অমূল্য সম্পদ। একেকটা অঞ্চলভিত্তিক যেসব লোকজ শিল্প এবং পালাগান, কবিগান, যাত্রা এ রকম বিভিন্ন জিনিস রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে অনেক ঐতিহ্য আমরা জানতে পারি এবং এগুলো চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করা, এগুলো বিকশিত করা এটা একান্তভাবে প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রান্ত থেকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা ও কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।