জেকেজির দুই হাজার রিপোর্টে গড়মিল, শিগগিরই অভিযোগপত্র
করোনার পরীক্ষায় জেকেজি হেলথ কেয়ার প্রায় দুই হাজার রিপোর্ট গড়মিল করেছে। নামে মাত্র নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে না পাঠিয়েই তারা মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে বলে জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি জানায়, জেকেজির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্তের শেষ পর্যায়ে রয়েছে ডিবি। তাই দ্রুত সময়ে দু’একদিনের মধ্যে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, আমাদের তদন্তে দেখা যায় জেকেজি ১৩ হাজার ৫৮৫টি নমুনা সংগ্রহ করেছিল। এরমধ্যে ১১ হাজার ৬৬০টি জেকেজি হেলথ কেয়ারের মাধ্যমে করা হয়েছে। বাকি ১ হাজার ৯২৫ টি নমুনা তারা ল্যাবে পাঠায়নি, এমনকি সঠিকভাবে নমুনা সংগ্রহও করেনি।
গ্রাহকের নমুনা সংগ্রহের ফর্মে দেওয়া ই-মেইল ঠিকানায় তারা একটি ফেইক ইমেইল সার্ভার ব্যবহার করে সেগুলোর রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছে। এমনও হয়েছে যে তারা নমুনা সংগ্রহ করেছে কিন্তু টেস্টের জন্য ল্যাবে না পাঠিয়ে নিজেরাই মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেকেজি যেসব কম্পিউটার ও মেশিনারিজ ব্যবহার করে এসব ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করতো সেগুলো আমরা সিআইডির ফরেনসিক এক্সপার্ট দিয়ে পরীক্ষা করিয়েছি। যার ফলাফল আমাদের কাছে আছে এবং ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া যাবতীয় যে প্রাসঙ্গিক বিষয় রয়েছে সেগুলো আমরা সংগ্রহ করেছি। আমদের তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে তাই দ্রুত সময়ে দু’একদিনের মধ্যে অভিযোগপত্র জমা দেবো।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, জেকেজি একটি অনুমোদনহীন কোম্পানি, এটা তাদের ব্যবসায়িক কোনো রেজিস্ট্রার প্রতিষ্ঠান না। করোনা পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের কাছ থেকে যে অনুমোদন তারা নিয়েছে, তখন থেকে দুই মাস পর তারা কাউন্সিলরের কাছ থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদনহীন তাই আরিফ চৌধুরী ও ডা. সাবরিনা নিজেদের কখনও চেয়ারম্যান, কখনও আহ্বায়ক, কখনও উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
জেকেজির যে গড়মিলের রিপোর্ট পেয়েছি তার সব ডকুমেন্ট আমরা স্বাস্থ্য বিভাগকে দেবো। তারা তাদের বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী তাদের কর্মীদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।
গত ১২ জুলাই ডা. সাবরিনাকে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে ডেকে জেকেজির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেকেজির সঙ্গে নিজের সম্পৃকতাসহ কোনো বিষয়েই সদুত্তর না পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এর আগে গত ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে আরিফুলসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফ চৌধুরীর প্রতারণার নেপথ্যে ছিলেন তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে সব যোগাযোগ রক্ষা করতেন সাবরিনাই।