জুলাইয়ের মধ্যে বসবে পদ্মা সেতুর সব স্প্যান
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
আগামী জুলাই মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর সব স্প্যান বসানো শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান । চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নে ওবায়ুদুল কাদের জানান, পদ্মা সেতুর ৪১টি স্টিল ট্রাসের (স্প্যান) মধ্যে ২০টি ইতোমধ্যে স্থাপন হয়েছে। বাকি ২১টি আগামী জুলাইয়ের মধ্যে স্থাপন হবে।
মন্ত্রী জানান, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর কাজের ভৌত অগ্রগতি ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ৬৬ শতাংশ। ২০২১ সালের জুন মাসে এ সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে বলেও মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
মোট ৪২টি পিয়ারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল এই সেতুটি কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রæপ মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে।
নদীশাসনের কাজ করছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর সেতুর মূল কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের মধ্যে নির্মাণের লক্ষ্য থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। বাস্তবায়নাধীন উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেলের সার্বিক অগ্রগতি (ডিসেম্বর ২০১৯) ৪০ দশমিক শূণ্য ২ শতাংশ বলেও মন্ত্রী জানান।
সংরক্ষিত আসনের সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন-পার্সোনালাইজড’ ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ডের স্বল্পতার জন্য স্বাভাবিক গতিতে লাইসেন্স কার্ড প্রিন্ট সম্ভব হচ্ছে না। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ প্রয়োজনে (ভিসা/বিদেশ যাত্রা/চাকরির আবেদন) দৈনিক নির্ধারিত সিলিং অনুযায়ী লাইসেন্স কার্ড প্রিন্ট ও সরবরাহ চলমান আছে। আন-পার্সোনালাইজড কার্ডের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র চলমান আছে। এটি সম্পন্ন হলে প্রত্যাশীদের যথাসময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা সম্ভব হবে, বলেন তিনি।
সরকারি দলের নাছিমুল আলম চৌধুরীর প্রশ্নে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী জানান, মোটরযানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গত বছর ২৩ হাজার ৫৪১টি মামলা দায়ের করে চার কোটি ৫৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৩০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ সময়ে ৩০৪ জনকে কারাদÐ ও ১৯৮টি গাড়ি ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে। সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন রেল দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ করেন।
মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী যেসব কারণে রেল দুর্ঘটনা ঘটে তা হল- জনবল সংকটে ট্র্যাক, কোচ, ব্রিজ ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, অবৈধ লেভেল ক্রসিং দিয়ে অনিয়ন্ত্রিত সড়ক যান পারাপার, রেলওয়ে ইঞ্জিন বিকলতা, ট্রেন থেকে যাত্রীদের পড়ে যাওয়া বা লাফ দেয়া, রেল ট্র্যাক ভাঙ্গা, টেলিফোন ব্যবস্থার বিকলতা, পয়েন্ট ফেটে যাওয়া, ট্রেন পার্টিং, লাইন চ্যুতি, রেলগাড়ী সংক্রান্ত ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, কোনো পশুর ট্রেন লাইনের ওপর দিয়ে চলাচল, অত্যাধিক বন্যায় ট্রেন চলাচল বিচ্ছিন্ন হওয়া, দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ ইত্যাদি।
জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমানের প্রশ্নে রেলপথ মন্ত্রী জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম ভায়া কুমিল্লা/লাকসাম দ্রæতগতির রেলপথ নির্মাণের সমীক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বিশদ নকশা প্রণয়নসহ সম্ভাব্যতা সমীক্ষার বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৬২ শতাংশ।