September 8, 2024
জাতীয়

জুমার নামাজ পড়ে না, ঈদ-হজেও বিশ্বাসী নয় ‘আল্লাহর দল’ : র‌্যাব কর্মকর্তা

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

সন্দেহভাজন জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আল­াহর দল’-এর চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এই গোষ্ঠীর সদস্যরা জুমার নামাজ পড়েন না, ঈদ-হজ ও কোরবানিতেও বিশ্বাস নেই তাদের।

মঙ্গলবার রাতে ঢাকার দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের সম্পর্কে বলেন র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারোয়ার বিন কাশেম।

গ্রেপ্তাররা হলেন- সিরাজুল ইসলাম মৃধা (৩৮), মনিরুজ্জামান মনির (৪০), এসএম হাফিজুর রহমান সাগর (৪৫) ও মো. শফিউল মোযানাবীন তুরিন (২৭)। এদের মধ্যে সিরাজুল এই গোষ্ঠীর যুগ্ম অধিনায়ক, মনির উপ-অধিনায়ক, সাগর সহ-অধিনায়ক এবং তুরিন আঞ্চলিক নায়ক পদে রয়েছেন বলে র‌্যাব কর্মকর্তা সারোয়ার জানান।

তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে গঠিত ‘আল­ার দল’র আমীর ছিলেন মতিন মেহেদী। তিনি বিভিন্ন সময়ে মুমিনুল ইসলাম, কখনও মতিন মাহবুব বা মেহেদী হাসান আবার মতিনুল হক নামও ব্যবহার করতেন।

২০০৭ সালে মতিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত আমীর হন ইব্রাহিম আহমেদ হিরো (৪৬)। পরে ২০১৪ সালে নাম পরিবর্তন করে ‘আল­াহর সরকার’ নাম নেয় গোষ্ঠীটি। গত ১৮ অগাস্ট ভারপ্রাপ্ত আমীর হিরোসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে এই চারজনকে ধরা হয় বলে র‌্যাব কর্মকর্তা সারোয়ার জানান।

তিনি বলেন, এই গোষ্ঠী গণতন্ত্র বা বাংলাদেশের সংবিধানে বিশ্বাসী নয়। তারা ঈদ, কোরবানি, হজে বিশ্বাস করে না। জুমার নামাজ আদায় করে না। প্রতি ওয়াক্তে মাত্র দুই রাকাত নামাজ পড়ে থাকে। কালেমার সাথে শেষ নবীর নাম যুক্ত করার ব্যাপারেও তাদের ভিন্ন মত রয়েছে। তারা তাদের নেতা মতিন মেহেদীকে আল­াহর বিশেষ দূত বলে মনে করে।

সারোয়ার বিন কাশেম জানান, নতুন গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে মনির ও সাগর স্নাতকোত্তর পাশ। সিরাজুল এসএসসি পাশ করার পর আর পড়েননি। আর তুরিন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে লেখাপড়া শুরু করলেও শেষ করেননি।

এদের মধ্যে সিরাজুল ১৯৯৯ সালে মতিন মেহেদীর কাছে দীক্ষা নিয়ে জঙ্গির তালিকায় নাম লেখান। প্রথমে তিনি ‘গ্রাম নায়ক’ পদ পান। কাজের দক্ষতায় ২০১৪ সালে যুগ্ম অধিনায়ক করা হয় তাকে। মনিরুজ্জামান মনিরও ১৯৯৭ সালে মতিনের কাছ থেকে দীক্ষা নিয়েছিলেন, ২০১৯ সালে সংগঠনের উপ-অধিনায়ক করা হয় তাকে।

সাগর সরাসরি কারও কাছ থেকে দীক্ষা না নিয়ে কযেকজন বন্ধুর মাধ্যমে এই সংগঠনের যোগ দেন। পরে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, যশোর এলাকায় ‘নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের’ পুরস্কার হিসাবে এ বছরই তাকে সহ-অধিনায়ক পদ দেয় গোষ্ঠীটি। আর তুরিন ভারপ্রাপ্ত আমীর ইব্রাহিম আহমেদ হিরোর কাছ থেকে ২০১০ সালে দীক্ষা নেন।

গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে তিনটি পেনড্রাইভ, ১২টি মোবাইল ফোন, সংগঠনের লিফলেট ও আয়-ব্যয়ের হিসাবের খাতা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক সারোয়ার।

তিনি বলেন, এই সংগঠনের আর্থিক কাঠামো বেশ শক্তিশালী। নামে-বেনামে বেশ কিছু ব্যাংক একাউন্টে টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, এগুলো যাচাই করা হচ্ছে।

এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, তাদের দলের নাম আল­াহর দল হলেও তারা ইসলামের অপব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে কথিত ইসলামী গানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে উগ্রবাদে উৎসাহিত করে থাকে।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *