জাল এনআইডিতে ব্যাংক ঋণ : মিরপুরে গ্রেফতার ৫
ব্যাংকের ঋণ নিয়ে খেলাপি হলে সিআইবি খারাপ হয় ফলে পুনরায় খেলাপিরা ব্যাংক ঋণের আবেদন করতে পারেন না। ঋণ পাস করতে জালিয়াতি চক্র ঋণ নিতে আগ্রহীদের জাল জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করে। এজন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয় হয় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। এরপর সেই এনআইডি দিয়ে ঋণ পাস হলে তার ১০ শতাংশ হারে কমিশন নিত চক্রটি।
রাজধানীর মিরপুরে দ্বৈত, জাল ও ডুপ্লিকেট এনআইডি তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলনে সহায়তাকারী এমন প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতাররা হলেন, মো. সুমন পারভেজ (৪০), মো. মজিদ (৪২), সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর (৩২), আনোয়ারুল ইসলাম (২৬) ও আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪১)।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডের ডি-ব্লক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে দ্বৈত, জাল ও ডুপ্লিকেট ১২টি এনআইডি উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ওয়ালিদ হোসেন জানান, ব্যাংক ঋণ নিয়ে কেউ খেলাপি হলে তাদের সিআইবি খারাপ হয় ফলে পুনরায় তারা ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন না। তখন গ্রেফতারকৃত সুমন ও মজিদ ঋণ পাস করে দিবে মর্মে প্রথমে জাল এনআইডি তৈরির জন্য প্রত্যেকের নিকট হতে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা নিতেন।
পরবর্তী সময়ে ঋণ পাস হলে সমূদয় টাকার ১০ শতাংশ হারে দিতে হবে মর্মে চুক্তি করতেন। চুক্তিতে একমত হলে তারা প্রথমে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন।
জাল এনআইডি তৈরি করে দিতেন তাদের সহযোগী গ্রেফতারকৃত সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর ও আনোয়ারুল ইসলাম। তারা প্রত্যেকটি জাল এনআইডি তৈরি বাবদ ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা করে নিতেন।
সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর ও আনোয়ারুল ইসলাম ই-জোন কোম্পানির মাধ্যমে আউট সোর্সিংয়ে নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনের অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করার কারণে নির্বাচন কমিশন অফিসের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই জাল এনআইডি তৈরি করতে পারতেন।
তারা এ পন্থা অবলম্বন করে অনেককে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলন করে দিয়েছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডের থানায় মামলা করা হয়েছে।