November 30, 2024
আন্তর্জাতিক

‘জানুয়ারি বিপ্লব’, রাশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পছন্দে সায় জানিয়ে মিখাইল মিশুস্তিনকে নতুন প্রধানমন্ত্রী পদে অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়ার পার্লামেন্ট।

বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমার ৪২৪ সদস্যের মধ্যে ৩৮৩ জনই তাকে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মিশুস্তিনের বিপক্ষে কেউ ভোট দেয়নি; ৪১ জন ভোটদানে বিরত ছিলেন।

বুধবার বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের’ ভাষণে পুতিন গণভোটের মাধ্যমে সংবিধানে বড় ধরনের সংশোধনী আনার প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে প্রেসিডেন্টের অনেক ক্ষমতা পার্লামেন্টের কাছে হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে, জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো।

বর্তমান নিয়মে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের প্রেসিডেন্টই নিয়োগ দেন। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমা সে সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে।

প্রস্তাবিত সংশোধনীর মধ্যে রাশিয়ায় আন্তর্জাতিক আইনের দাপট কমানো, প্রেসিডেন্টের দুই মেয়াদের নিয়ম সংশোধন করা, বিদেশি নাগরিকত্ব কিংবা বিদেশে বসবাসের অনুমতি থাকা ব্যক্তিদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে নিষিদ্ধের আইন সুসংহত করা কথাও বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

পুতিনের ভাষণের পরপরই প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদভ মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে পদত্যাগ করেন।

বৃহস্পতিবার দুমার অনুমোদনের পর রুশ প্রেসিডেন্ট এক ডিক্রিতে ৫৩ বছর বয়সী মিশুস্তিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন।

পুতিনের এ আচমকা সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব ও প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনকে ‘জানুয়ারি বিপ্লব’ হিসেবে অভিহিত করেছে রুশ দৈনিক কোমারসান্ত।

পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের অনেকেই সাবেক কেজিবি গোয়েন্দার এ পদক্ষেপকে ‘আজীবন ক্ষমতায় থাকার’ উপায় হিসেবে দেখছেন।

নতুন প্রধানমন্ত্রী মিশুস্তিন এর আগে রাশিয়ার কর বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের নাম দ্রুত ঘোষণা করা হবে বলেও বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন তিনি।

৬৭ বছর বয়সী পুতিন তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষের চারবছর আগেই সংবিধান পরিবর্তনের এ পথ বেছে নিচ্ছেন। রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, কেউ টানা দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে পারেন না।

১৯৯৯ সাল থেকে পুতিন চারবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন দু’বার। ২০১২ সালে আবার প্রেসিডেন্ট পদে ফিরেই আইনপ্রণেতাদের দিয়ে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ চার বছর থেকে বাড়িয়ে ছয় বছর করিয়ে নেন তিনি।

এ দফায় পুতিন টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালে। তাই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য পুতিন ক্ষমতা ছাড়বেন, নাকি সংবিধানই পরিবর্তন করবেন তা নিয়ে প্রশ্নের মধ্যেই গণভোটের এ প্রস্তাব এল।

মেয়াদ শেষের পর কি করবেন তা এখনো বলেননি পুতিন। বর্তমান সংবিধানের আওতায় তিনি আরেকবারের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াতে পারছেন না।

বৃহস্পতিবার পুতিন সংবিধানের সংশোধনী নিয়ে গঠিত ‘ওয়ার্কিং গ্রুপের’ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যমগুলো। সংশোধনী প্রস্তাব প্রস্তুতে রুশ প্রেসিডেন্ট এক মাসের সময়ও বেঁধে দিয়েছেন, বলেছে তারা।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *