জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় করা শস্য রপ্তানি চুক্তি স্থগিত করলো রাশিয়া
কৃষ্ণসাগরের ক্রিমিয়া উপকূলে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার পর ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালো রাশিয়া। কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে শস্য রপ্তানি ফের চালু করেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। গত ২২ জুলাই ইস্তাম্বুলে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সই হয় বহুল প্রত্যাশিত সেই চুক্তি। এবার সেই চুক্তি থেকে সরে এলো রাশিয়া।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) ক্রিমিয়া উপকূলে হামলার পর এ চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে বিশ্বে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির পথ সহজ করার প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ হয়ে গেলো।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে যে ইউক্রেন শনিবার ভোররাতে ১৬ টি ড্রোন দিয়ে সংযুক্ত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সেভাস্তোপোল বন্দর ব্যবহার করে তাদের নৌবহরে হামলা চালিয়েছে। ব্রিটিশ নৌবাহিনীর ‘বিশেষজ্ঞরা’ ‘সন্ত্রাসী’ হামলার সমন্বয় করতে সহায়তা করে বলেও অভিযোগ রাশিয়ার। তবে লন্ডন মস্কোর দাবিকে অকপটে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই চুক্তির আওতায় এরইমধ্যে ৯০ লাখ টনেরও বেশি ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানি করার অনুমোদন হয় এবং আগামী ১৯ নভেম্বর চুক্তিটি নবায়ন করার কথা ছিল।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনের বন্দর থেকে কৃষি পণ্য রপ্তানির চুক্তি বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ স্থগিত করেছে’।
কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার নৌবহরে ইউক্রেন ‘সন্ত্রাসী’ হামলা চালিয়েছে। এতে শস্য করিডরের জন্য কাজ করা জাহাজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণে এমন সিদ্ধান্ত।
রাশিয়ার দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের অন্যতম বড় শহর এই সেভাস্তোপোল। সম্প্রতি শহরটি বেশ কয়েকবার হামলার টার্গেটে পরিণত হয়েছে।
ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে কার্যত বন্ধ থাকে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো। শুধু ওডেসা বন্দরেই আটকা পড়ে ২৫ মিলিয়ন টন শস্য। চুক্তি সইয়ের ফলে রাশিয়ার খাদ্যপণ্যসহ সারও রপ্তানি শুরু হয় এই সমুদ্রপথে।
বিশ্বে খাদ্যের ১০ ভাগের এক ভাগ সরবরাহ করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। বৈশ্বিক গম রপ্তানির ৩০ শতাংশের পাশাপাশি সূর্যমুখী তেলের ৬০ শতাংশ উৎপাদন করে তারা। কমপক্ষে ২৬টি দেশ তাদের অর্ধেকেরও বেশি খাদ্যশস্যের জন্য রাশিয়া-ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল।