জলবায়ু: সুন্দর-সুন্দর কথার বদলে কার্যকর পদক্ষেপ চান রাষ্ট্রপতি
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
কেবল ‘প্রতিশ্র“তি আর সুন্দর-সুন্দর কথার’ বদলে জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় কার্যকর সহযোগিতা নিয়ে উন্নত বিশ্বকে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
গতকাল রবিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদ আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফরেন্স অন আর্থ অ্যান্ড সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজিস ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট-২০২০’ শীর্ষক সম্মেলনে তার এ মন্তব্য আসে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের থাকার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, অথচ দূষণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশসহ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ভূমিকা খুবই নগণ্য। যেসব দেশ এর জন্য দায়ী তাদেরকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সমস্যা এখন আর কোনো একটি দেশ বা অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা। তাই এর সমাধানে গোটা বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু প্রতিশ্রæতি আর সুন্দর-সুন্দর কথার মধ্যে সমাধান না খুঁজে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিশ্ব স¤প্রদায়, দাতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমের আধুনিকায়নের তাগিদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অনুষদের বিভাগগুলোর শিক্ষাক্রম আরো আধুনিক, প্রায়োগিক ও বাস্তবমুখী করে তোলার উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়কে নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে দেশের প্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি উন্নয়ন-কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়।
অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণকে নানাবিধ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কাজে সম্পৃক্ত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগের পরিধি বাড়ানোর আহŸান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন তাত্তি¡ক জ্ঞানের সাথে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের সমন্বয় এবং তার প্রায়োগিক রূপান্তর। তাই বর্তমান সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি দপ্তরসমূহের যোগসূত্র বা ‘ইন্ডাস্ট্রি ইউনিভার্সিটি পার্টনারশিপ’ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত একটি ধারণা।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উচিত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করে দেশি-বিদেশি গবেষকদের সমন্বয়ে উদ্ভাবনী গবেষণার নব-দিগন্ত অনুসন্ধানের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত থাকা।
অন্যদের মধ্যে লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের অধ্যাপক পিটার স্যামন্ডস, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন এ এসএম মাকসুদ কামাল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।