জন্মদিন পালন করার কথা বলে হোটেলে নিয়ে হত্যা
রাজধানীর পান্থপথে একটি হোটেল থেকে এক নারী চিকিৎসকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পলাতক কথিত প্রেমিক রেজাউল ইসলামকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সেই নারী চিকিৎসকের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক চলাকালে অন্য নারীর সাথেও তার সম্পর্ক ছিল। তাদের প্রেমের বিষয়টি পরিবার জানতো। কিন্তু তারা দুই পরিবারের অমতে না জানিয়ে বিয়ে করেছিল।
সেই নারী চিকিৎসক কথিত প্রেমিকের চরিত্র খারাপের কথা জানতে পারলে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। ফলে রেজাউল তাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। তারই অংশ হিসাবে গত বুধবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটায় জন্মদিন পালন করার কথা নিয়ে যায় ওই নারী চিকিৎসককে। এজন্য তারা একটি জায়গায় থাকতে চায়। এ কথা বলে হোটেলে নিয়ে যায়।
সেখানে তাদের একটি বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা বাধলে রেজা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার জন্য রেজা আগেই একটি ধারালো অস্ত্র কিনে ব্যাগে করে নিয়ে আসে। হত্যার পর তার রক্তমাখা জামা ও হত্যার শিকার নারীর মোবাইল ফোনটি তার ব্যাগে ভরে। এর আগে গায়ে লাগা রক্ত পরিস্কার করতে রেজা গোসল করে নেয়। পরে সে হোটেল থেকে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে সেই কথিত নারী প্রেমিক রেজাউল ইসলাম।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এর আগে অভিযান চালিয়ে রেজাউলকে চট্রগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন জানান, ঘটনার সময় সেই নারীকে হত্যার সময় ধস্তাধস্তি হয়। ফলে তার হাতে আঘাত পায়। পরে সে একটি ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সেই রাতেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে যায়। সেখানে গিয়ে আত্মীয়ের মেসে ওঠে এবং সেখানে থেকে এক আইনজীবীর সাথে কথা বলে সে এই রকম ঘটনায় কিভাবে নিজেকে রক্ষা করবে।
তিনি আরও জানান, রেজা একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাশ করে ব্যাংকে চাকরি নেন। তিনি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তার চরিত্রগত কারণে চাকরী চলে যায়। তাদের মধ্যে এ নিয়ে মনোমালিন্য চলছিল।
রেজা র্যাবকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তাদের পরস্পরের মধ্যে বিভিন্ন কারণে অবিশ্বাস জন্ম হয়েছিল। এই বছরের প্রথম দিকে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে রেজার চাকরি চলে যায়। তার নেপথ্যের কারণ ছিল চরিত্রগত সমস্যা।