ছয় জেলায় বজ্রপাতে ঝরল ১৮ প্রাণ
দেশের ছয় জেলায় মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে ১৮ জনের প্রাণ গেছে বজ্রপাতে। এর মধ্যে নেত্রকোনায় নয়জন, ফরিদপুরে চারজন, মানিকগঞ্জে দুজন এবং সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে একজন করে মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৮ মে) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটেছে।
নেত্রকোনা : নেত্রকোনার চার উপজেলায় হাওরে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে ৯ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কেন্দুয়া উপজেলায় দুজন, মদনে দুজন, খালিয়াজুরীতে চারজন কৃষক ও পূর্বধলায় এক শিশু রয়েছে।
এছাড়া বজ্রপাতে খালিয়াজুরীতে পাঁচজন ও মদনে চারজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৩টায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, কেন্দুয়ার পাইকুড়া ইউনিয়নের বৈরাটী গ্রামের মো. বায়েজিদ মিয়া (৪২) ও কান্দিউড়া ইউনিয়নের কুণ্ডলী গ্রামের মো. ফজলুর রহমান (৫৫), খালিয়াজুরীর মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের খেলু ফকিরের ছেলে কৃষক অছেক মিয়া (৩২) একই গ্রামের আমির সরকারের ছেলে কৃষক বিপুল মিয়া (২৮), বাতুয়াইল গ্রামের মঞ্জুরুল হকের ছেলে মনির হোসেন, মদন উপজেলার পশ্চিম ফতেপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে হাফেজ মো. শরীফ (১৮) ও একই গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফের ছেলে মাওলানা আতাবুর রহমান (১৯), পূর্বধলার দলামূলগাঁও ইউনিয়নের টাকলি গ্রামের ইছাক মিয়ার ছেলে জুনাইদ (৮) ও বাজিতপুর উপজেলার সুতারপাড়া দীঘিরপাড় গ্রামের শিশু মিয়ার ছেলে নৌ শ্রমিক বাছন মিয়া (২২)।
মানিকগঞ্জ : মঙ্গলবার বিকেলে জেলার সদর উপজেলার গিলন্ডে ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে এক স্কুলছাত্র ও পৌরসভার পৌলী এলাকায় ধান কাটতে গিয়ে এক শ্রমিক বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুজন।
নিহতরা হলেন-সদর উপজেলার গিলন্ড গ্রামের মাসুদ মোল্লার ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র আসিফ (১৫) এবং ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া গ্রামের বাসিন্দা আজমত আলী (৫০)। আহতদের মধ্যে অনিক নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ফরিদপুর :
জেলায় বজ্রপাতে নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ও সাড়ে ৫টার দিকে ফরিদপুর পৌরসভার পশ্চিম গঙ্গাবর্দী, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লা ডাঙ্গী মহল্লায়, সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ও মধুখালী উপজেলার চাঁদপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ধান নিয়ে বাড়িতে ফেরার সময় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফরিদপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাডাঙ্গী মহল্লায় বজ্রপাতে নিহত হন আনোয়ারা বেগম (৪৫) নামে এক নারী। আনোয়ারা বেগম মোল্লা ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা কৃষক কাবুল শেখের স্ত্রী।
এদিকে, বিকেল ৪টার দিকে ধান নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ফরিদপুর পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী মহল্লায় বজ্রপাতে কৃষক কবির মোল্লা (৪৮) নিহত হয়েছেন।
এছাড়া বিকেলে বজ্রপাতে সদর উপজেলার নথ চ্যানেল ইউনিয়নে মারা যান দুলাল খান (৫৮) নামের এক কৃষক।
মধুখালী উপজেলায় বৃষ্টির মধ্যে পাটক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে কবির শেখ (৪১) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের নবিন শেখের ছেলে।
ময়মনসিংহ : তারাকান্দা উপজেলায় ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে আতিকুল ইসলাম নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও একজন। দুপুর ২টায় উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের খলিশাজান গ্রামে খোলা মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আজিজুল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের খলিশাজান গ্রামের আজমত আলীর ছেলে।
সুনামগঞ্জ: দোয়ারাবাজা উপজেলায় বজ্রপাতে আবু তাহের (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। বিকেলে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবু তাহের দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের তেগাঙ্গা গ্রামের তাজউদ্দিনের ছেলে।
কিশোরগঞ্জ : নিকলীতে বজ্রপাতে মো. আরিফুল ইসলাম (১৭) নামের এক কিশোর গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হয়েছে। দুপুরে উপজেলার গুরুই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী বিয়াতিরচর হাওরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আরিফুল গুরুই ইউনিয়নের বেতি নোওয়াগাঁও এলাকার মিয়া চাঁনের ছেলে।