ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেন আইএসের শামীমা বেগম
দক্ষিণাঞ্চল ডেক্স
জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে লন্ডন থেকে সিরিয়ায় পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগম একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
চার বছর আগে আইএসের সঙ্গে নতুনভাবে জীবন শুরু করার উদ্দেশ্যে আরও দুই সঙ্গীসহ লন্ডন থেকে পালিয়েছিলেন ১৫ বছর বয়সী শামীমা। গত সপ্তাহে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে তার খোঁজ পাওয়া যায়।
বর্তমানে ১৯ বছর বয়সী শামীমা স্কাই নিউজকে বলেছেন, “আমি যা কিছুর ভিতর দিয়ে গেছি তার জন্য আমার প্রতি সবার সহানুভূতি থাকা উচিত।”
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আর অন্য কোনো দেশের নাগরিক নয় এমন একজন ব্রিটিশকে যুক্তরাজ্য দেশে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সিরিয়া গিয়ে তিনি ভুল করেছেন কি না এমন প্রশ্নে শামীমা স্কাই নিউজকে বলেছেন, “একভাবে দেখলে, হ্যাঁ, কিন্তু এ নিয়ে দুঃখ করি না কারণ মানুষ হিসেবে এটাই আমাকে পাল্টে দিয়েছে।
“এটি আমাকে শক্ত, কঠিন করে তুলেছে। আমি আমার স্বামীকে পেয়েছি। যুক্তরাজ্যে ফিরে গেলে আমি তার মতো কাউকে পেতাম না।
“আমি নিজের সন্তান পেয়েছি, এখানে ভালো একটি সময়ও কাঁটিয়েছি। এরপর পরিস্থিতি কঠিন হয়ে গেল এবং আমি আর এটি নিতে পারছি না।”
চার বছর আগে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে তুরস্ক যাওয়ার পথে গ্যাটউইক বিমানবন্দরে ব্রিটিশ কিশোরী আমিরা আবাসি, খাদিজা সুলতানা ও শামীমা বেগম (বাম থেকে)। ছবি: রয়টার্স
চার বছর আগে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে তুরস্ক যাওয়ার পথে গ্যাটউইক বিমানবন্দরে ব্রিটিশ কিশোরী আমিরা আবাসি, খাদিজা সুলতানা ও শামীমা বেগম (বাম থেকে)। ছবি: রয়টার্স
এর আগে রোববার শামীমাদের পারিবারিক আইনজীবী মোহাম্মদ তাসনিম আখুনজি রোডিও ফোরের দ্য ওয়ার্ল্ড অনুষ্ঠানকে বলেছেন, “শামীমা ভালোভাবে সন্তানের জন্ম দিয়েছে এবং সে সুস্থ আছে এতে তারা অবশ্যই খুব খুশি ও উৎফুল।”
এরপর তিনি জানিয়েছেন, সিরিয়ায় শামীমার আগের দুটি সন্তান মারা গেছে, এমন খবর জানার পর তার পরিবারের সবাই শিশুটির ব্যাপারে ‘খুব উদ্বিগ্ন’ হয়ে আছে এবং চায় তারা ফিরে আসুক।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে শামীমা ও স্কুল পড়ুয়া আরও দুইজন, খাদিজা সুলতানা ও আমিরা আবাসি, পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিনের বাসা থেকে পালিয়ে তুরস্ক হয়ে সিরিয়া চলে যান।
বোমা হামলায় বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে খাদিজার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। অপরজন আমিরার ভাগ্যে কী ঘটেছে তা অজানাই রয়ে গেছে।
শামীমা ধর্মান্তরিত এক ডাচ নাগরিককে বিয়ে করে সিরিয়ার আইএস নিয়ন্ত্রিত শহর রাকায় বসবাস করছিলেন। পরে রাকার পতন হলে তারা ফোরাত নদীর তীরবর্তী আইএসের ছিটমহল বাঘুজে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
স¤প্রতি সিরিয়ায় আইএসের তথাকথিত ‘খিলাফতের’ অবশিষ্টাংশ বলে বিবেচিত বাঘুজের পতন হলে শামীমার স্বামী আত্মসমর্পণ করেন, আর বাঘুজের অন্যান্য বেসামরিকদের মতো শামীমার ঠাঁই হয় সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে।