November 24, 2024
খেলাধুলা

ছেলেদের ‘ভূত’ মেয়েদের ঘাড়ে!

আগের রাতে হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। খেলা সকাল ৯টায়। এর মধ্যে উইকেট যদি মন্থর হয় তাহলে তো স্পিনারদের জন্য পেয়োবারা। পাকিস্তানী বোলারারা এমন উইকেটের সুবিধা নিয়েছেন কড়ায়-গণ্ডায়। আর যেন নিজেদের খোঁড়া গর্তে নিজেরাই ডুবেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা।

সিলেটের গ্রাউন্ড টু যেন স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। উদ্বোধনী ম্যাচ থেকেই বল নিচু হয়ে আসে, হুট করে ঢুকে যায় ভেতরে কিংবা টার্ন করে বেরিয়ে যায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের চেনা ভূমিতে চোখে ষর্ষে ফুল দেখেছেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা। টসের হার গড়ে দিয়েছে পার্থক্য।

টস জেতাটা ভাগ্যের উপর। কে জিতবে কে হারবে কেউ জানে না। কিন্তু এটার উপর নির্ভর করে সুবিধা আদায় করতে গেলে ছোট দলগুলোর বিপক্ষে পার পেয়ে যেতে পারে কিন্তু বড় দলের বিপক্ষে হতে পারে উল্টোটা। আজ তাই হয়েছে। বিশেষ উইকেট বানিয়ে সাফল্য পাওয়া যায় তবে সেটি দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

জ্যোতির এই দলও স্পিন নির্ভর। প্রতিপক্ষকে কম রানে আটকে জয়টাই যেন মূলমন্ত্র। কিন্তু এখানে টি-টোয়েন্টির উন্নতির  পথ সেটি থেকে দূরে সরে যায়। হয়েছেও তাই। মেয়েদের এমন অবস্থা মনে করিয়ে দেয় ছেলেদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। মন্থর উইকেট বানিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। জয়ের অভ্যাস গড়তে গিয়ে এখন জয় থেকে বহুদূরে। এই এক ভুলের মাশুল দিচ্ছে এখনো সাকিব আল হাসানের দল। মেয়েদের ক্রিকেটেও এখন যেন মন্থর উইকেটের ভূত চেপে বসেছে।

আজ উইকেট নিয়ে দুই দলের ক্রিকেটাররাই সমালোচনা করেছেন। জয়ী দলের ওপেনার সিদরা আমিনতো বলেই দিয়েছেন এটি টি-টোয়েন্টির উইকেট নয়, ‘আমার মনে হয় এটা আদর্শ উইকেট না টি-টোয়েন্টি সংস্করণের জন্য। কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে যে কোনও কন্ডিশনে মানিয়ে নিয়ে খেলতে হবে।’

‘আমার মনে হয় একশো বা আশি, এমনকি সত্তরও রানও হয়তো (আটকানো সম্ভব)। কারণ বল খুব টার্ন হচ্ছিল। যে বোলার ঝুলিয়ে বল করছিল টার্ন পাচ্ছিল, নিচু হচ্ছিল। এখানে ইম্প্রোভাইজেশন করা কঠিন। খুব বেশি শট খেলা কঠিন’-আরো যোগ করেন সিদরা।

এদিকে বাংলাদেশি অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সালমা খাতুনের ভাষ্য, ‘উইকেটটা আলাদা ছিল। অনেক টার্ন হয়েছে। আগের ম্যাচে কিন্তু এমন ছিল না। প্রথম ওভারেই একটা উইকেট পড়ে গিয়েছে যে কারণে চাপটা আরও বেড়ে গিয়েছে। উইকেটটা এরকমই ছিল যেহেতু কালকে অনেক বৃষ্টি হয়েছে। ব্যাটাররা কেউ দাঁড়াতে পারেনি। এ কারণেই আমাদের রান এত কম হয়েছে।’

বাংলাদেশের পরিকল্পনাও যেন ছক কাটা। একাদশে একগাদা স্পিনারে। পেসারদের যেন মনে পড়ে কালেভাদ্রে। নিয়মিত পেসার জাহানারা আলমকেও আজ বসে থাকতে হয় সাইডবেঞ্চে।
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ মাত্র পেসে ২ ওভার বোলিং করে। আজ ৩ ওভার। স্পিন কেন্দ্রিক উইকেট গড়ে টি-টোয়েন্টি হয় না সেটি বুঝবে কবে টিম ম্যানেজম্যান্ট? নাকি ছেলেদের মতো টানা ব্যর্থতার পর টনক নড়বে?

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *