ছাত্রলীগকে প্রশংসায় ভাসালেন ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহর বক্তব্যের প্রতিবাদে স্মারকলিপি দিতে যাওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রশংসায় ভাসালেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। স্মারকলিপি গ্রহণের আগে ছাত্রলীগ নেতাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন তিনি।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ দেই তাদের সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরিশীলিত ভাষায় বিষয়টির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর জন্য। ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক যেভাবে দায়িত্বশীল ও যৌক্তিকভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন, সেটির সঙ্গে কোনোভাবে দ্বিমত করার লোক সমাজে বেশি থাকবে না।
তিনি বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ এবং ভাষা আন্দোলন—এই মূল্যবোধের সঙ্গে কোনোক্রমে যেকোনো ধরনের অশুভ শক্তির কোনো ধারণা বা মত এবং দর্শন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং বিশেষ করে এ জাতি কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না। সে কারণে আমরা এ বিষয়গুলোর প্রতি খুবই যত্নশীল এবং সহমত পোষণ করছি। আমি আশা করি, বিষয়টির একটি সুন্দর সমাধান আসবে। কোথাও কোথাও যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার উদ্রেক ঘটে, ছাত্রলীগ যেভাবে দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ করলো, এভাবে যেকোনো সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব।
রোববার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকালে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ। খন্দকার মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত বলে উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
খন্দকার মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহর বিচারের দাবিতে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাবি উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিতে যায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
স্মারকলিপিতে ছাত্রলীগ লিখেছে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড, বাঙালির হৃদয়ে ‘কুখ্যাত মীর জাফর’ হিসেবে ঘৃণিত খন্দকার মোশতাক আহমেদকে জ্ঞাত-অজ্ঞাভভাবে শ্রদ্ধা জানানোর মতো যেকোনো ঘটনা-বক্তব্যকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এই ঘটনাকে ধৃষ্টতামূলক বলে মনে করে। একইসঙ্গে কেবল বক্তব্য প্রত্যাহারই নয়, এই বক্তব্যের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনারও দাবি জানাচ্ছে।