চোখ দেখেই বুঝে নিন কঠিন অসুখে ভুগছেন কি না
চোখ যে মনের কথা বলে! শুধু মনের কথায় বলে না চোখ, বরং আপনার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণও প্রাথমিক অবস্থায় ফুটে ওঠে চোখে। অতিরিক্ত সাদা বা ফ্যাকাশে, লালচে, কিংবা হলদেটে চোখ শারীরিক নানা সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। যদিও অনেকেই এ বিষয়ে জানেন না আবার অনেকেই পাত্তা দেন না।
চিকিৎসকের কাছে গেলেও কিন্তু প্রথমেই তিনি আপনার চোখ পরীক্ষা করেন। এর কারণ হলো চোখ দেখেও অনেক রোগ শনাক্ত করা যায়। বিশেষ করে ৬ কঠিন রোগের লক্ষণ ফুটে ওঠে চোখে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-
ডায়াবেটিস
ঝাপসা দৃষ্টি চোখের একটি সাধারণ সমস্যা। তবে এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের কারণেও হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা রক্তনালিতে চাপ সৃষ্টি করে, ফলে চোখের পেছনে রক্তের দাগ দেখা যায়।
চোখে রক্তক্ষরণ হলে বুঝতে হবে রক্তে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। যদি গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না আনা হয় তাহলে ডায়াবেটিস রোগী অন্ধও হতে পারেন।
ক্যানসার
স্তন ক্যানসারের আগাম লক্ষণ ফুটে ওঠে চোখে। যখন ক্যানসার কোষগুলো শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন লক্ষণ চোখেও দেখা দিতে পারে।
চোখের কাঠামোর মধ্যে অস্বাভাবিক ক্ষত বা টিউমার যেমন ইউভিয়া নির্দেশ করে যে ক্যানসার কোষগুলো চোখের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। যদি আপনার ঝাপসা দৃষ্টি, চোখে ব্যথা, ঝলকানি বা ভাসমান কিছু দেখতে পান চোখের সামনে তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
উচ্চ কোলেস্টেরল
রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রাও প্রভাব ফেলে চোখে। এক্ষেত্রে আইরিসের চারপাশে একটি সাদা, ধূসর বা নীল বলয় তৈরি হয়। যদিও বার্ধক্যজনিত কারণেও রিং তৈরি হয়, আরেকটি কারণ হতে পারে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা।
যদি চোখে রিং বা গোলাকার চিহ্ন দেখতে পান তবে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করুন। উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
ক্ষতিগ্রস্ত রেটিনা
আপনি কি কখনো ছোট ছোট আলো চোখের সামনে ঘোরাফেরা করতে দেখেনে? এগুলোকে ফ্লোটার বলা হয়। হঠাৎ করে ফ্লোটারের সংখ্যা বাড়লে রেটিনা ছিঁড়ে যাওয়া বা বিচ্ছিন্নতাকে নির্দেশ করে। এই লক্ষণ উপেক্ষা করা উচিত নয়, কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলো চোখের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সংক্রমণ
আপনার কর্নিয়াতে একটি দৃশ্যমান সাদা দাগ (আপনার চোখের বলের সামনের অংশে একটি পরিষ্কার স্তর) কর্নিয়া সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।
যারা চশমার পরিবর্তে কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে এটি বেশিরভাগই দেখা যায়। ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকসহ দূষিত লেন্সগুলোর মাধ্যমে এই সংক্রমণ ঘটে। এই অবস্থায় কর্নিয়ায় দাগ ও ব্যথা হতে পারে।
জন্ডিস
যদি আপনার চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায় তবে এটি নির্দেশ করে যে আপনি জন্ডিসে ভুগছেন। রক্তে অত্যধিক বিলিরুবিন (লাল রক্তকণিকা ভাঙ্গনের ফলে গঠিত একটি হলুদ যৌগ) এর কারণে জন্ডিস হয়।
রক্তে যৌগের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো আপনার লিভার এটিকে সঠিকভাবে ফিল্টার করতে পারে না। এই অবস্থায় প্রস্রাব, ত্বক ও চোখ হলুদ বর্ষ ধারণ করে।