November 26, 2024
জাতীয়

চুক্তির ভিত্তিতে এলএনজি আমদানি করবে সরকার

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করবে সরকার। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্টের (এমএসপিএ) ভিত্তিতে এলএনজি আমদানি করার জন্য সরবরাহকারীদের একটি শর্টলিস্ট করা হয়েছে।

তাদের মাধ্যমেই এলএনজি আমদানি করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে।

আজ বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য সরকার এলএনজি আমদানি করছে। বর্তমানে কাতার গ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে দুটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে এলএনজি’র মূল্য দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির এলএনজি মূল্য থেকে কম থাকে।

এছাড়া, বছরের কোন সময়ে গ্যাসের চাহিদা কমে গেলে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি সরবরাহ গ্রহণ না করলেও মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এ বিবেচনায় এলএনজি আমদানিকারক দেশগুলো প্রয়োজনের কমবেশি ২৫ শতাংশ এলএনজি স্পট মার্কেট থেকে ক্রয় করে থাকে। এজন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে।

সূত্র জানায়, এলএনজি বিষয়ে প্রাপ্ত সব প্রস্তাব বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৫, ৬ ও ৭ ধারার বিধান অনুসারে নেগোসিয়েশনের জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এক চিঠির মাধ্যমে সাধারন প্রন্তাব প্রক্রিয়াকরন কমিটি (পিপিসি) গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে উক্ত কমিটির মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী ক্রয় চুক্তির পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি কার্যক্রম সম্পাদিত হবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।

সূত্র জানায়, ওই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ৮ জুন জাতীয় পত্রিকা এবং সিপিটিইউ, পেট্রোবাংলা ও আরজিপিসিএল-এর ওয়েবসাইটে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) প্রকাশ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৪৩ টি প্রতিষ্ঠান ইওআই দাখিল করে। এরপর যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিপিসি ৪৩ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে সংক্ষিপ্ত তালিকাভ’ক্ত করে। পরবর্তী সময়ে একটি প্রতিষ্ঠান স্পেনের উক্ত তালিকা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সংক্ষিপ্ত তালিকাভ’ক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯ টি। সংক্ষিপ্ত তালিকাভ’ক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ-ক্রয় বিক্রয় চুক্তি) স্বাক্ষরের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরামর্শক মি. টম ওয়েস্ট এবং পেট্রোবাংলার নিয়োজিত আইনজীবীর সহায়তায় একটি খসড়া এমএসপিএ প্রস্তুত করা হয়।

পেট্রোবাংলার নিয়োজিত আইনজীবীর সহায়তায় প্রস্তুতকৃত নেগোশিয়েটেড ড্রাফট এমএসপিএ-টি সংক্ষিপ্ত তালিকাভ’ক্ত ২৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়ে মতামত নেওয়ার মাধ্যমে তা চ’ড়ান্তকরনের সিদ্ধান্ত হয়। অতঃপর এমএসপিএ-টি সংক্ষিপ্ত তালিকাভ’ক্ত ২৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২১টি প্রতিষ্ঠান তাদের মতামত দেয়। গ্রহণযোগ্য মতামতগুলো খসড়া এমএসপিএ-তে সন্নিবেশ করে পিপিসি’র বৈঠকে চ’ড়ান্ত করা হয়। এরমধ্যে ১৭টি প্রতিষ্ঠান এমএসপিএ অনুস্বাক্ষর করে পাঠালে গত ২৮ জানুয়ারি পিপিসি’র বৈঠকে অনুমোদিত হয়।

সূত্র জানায়, অনুস্বাক্ষরিত এমএসপিএ-এর উপর লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং গ্রহণ করা হয়। ভেটিংয়ে প্রাপ্ত মতামতগুলোর আলোকে পেট্রোবাংলার নিয়োজিত আইনজীবীর মাধ্যমে এমএসপিএ-টি’র সংশ্লিষ্ট ধারা/উপধারায় প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হয়। একই সঙ্গে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী এমএসপিএ-এর ট্যাক্সেস অ্যান্ড চার্জেস এবং ট্রাক্স রিফান্ড বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পোর্ট চার্জেস বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং ক্রেডিট সাপোর্ট বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে, যা পর্যালোচনা করে এমএসপিএ হয়েছে।

সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদনের পর দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট থেকে সর্টলিস্টভ’ক্ত সরবরাহকারীদের মাধ্যমে এমএসপিএ-এর আওতায়  এলএনজি আমদানি করা হবে।

 

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *