চীনে বন্যার খবর সংগ্রহকালে বিদেশি ২ সাংবাদিককে হয়রানি
চীনে বন্যার খবর সংগ্রহকালে হয়রানির শিকার হয়েছেন বিদেশি দুই সাংবাদিক। চীনে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী সংবেদনশীলতা বৃদ্ধির মধ্যেই সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন মারমুখী আচরণ ও বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
শনিবার চীনের ঝেংঝুতে লসএঞ্জেলস টাইমসের অ্যালিস সু এবং ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক ম্যাথিয়াস বোয়ালিঞ্জার বন্যার ছবি তোলার সময় জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েন। এ সময় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গুজব ছাড়ানো ও চীনকে অপমান করার অভিযোগ তুলে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় অন্যান্য সাংবাদিকরাও আক্রমণের শিকার হন তবে মূল লক্ষ্য ছিল বিবিসির সংবাদকর্মীরা।
সাংবাদিক সু বলেন, ওই সব এলাকার আন্ডারগ্রাউন্ড মার্কেট বন্যায় ডুবে গেছে এবং অনেক ব্যবসায়ী তাদের সম্পদ হারিয়েছেন। ফলে সরকারের অপর্যাপ্ত সহায়তায় তারা হতাশ। তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা মারমুখী আচরণ শুরু করেন।
সু টুইটারে আরও বলেন, ঝেংঝুর জনতা পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে চেয়েছিল। যদিও একজন এই ঘটনায় জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তবে তা সন্তোষজনক নয়। সেখানকার অন্য সাংবাদিকরা জানান, বন্যার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে তারাও এর আগে এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। মাঝে মাঝে আল-জাজিরা এবং সিএনএনের সাংবাদিকরাও আক্রমণের শিকার হন।
ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক বোয়ালিঞ্জার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে টুইটারে বলেন, ধাক্কা দিয়ে আমাকে ভয় দেখানো হয়েছিল। সেখানকার জনতা ভেবেছিল, আমি বিবিসির সংবাদদাতা রবিন ব্র্যান্ট। চীনের জাতীয়তাবাদী চক্র ও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বিবিসি নিউজের বিরুদ্ধে জঘন্য প্রচারণা চলিয়েছে।
চীনে বিবিসির আরেক সংবাদদাতা স্টিফেন ম্যাকডোনেল টুইটারে বলেন, এখানে সংঘবদ্ধভাবে বিবিসির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। যারা বিদেশি গণমাধ্যমে কাজ করে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
বন্যায় চীনে কমপক্ষে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এখনো পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছে। কিন্তু চীনের গণমাধ্যম ২২ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। চীনের গণমাধ্যমগুলো সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অনুমোদন ছাড়া সেখানে সহজে সংবাদ প্রকাশ করা যায় না। জাতীয়তাবাদ বৃদ্ধির ফলে বিদেশি গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশ করা অনেক দুরূহ।
গত ১৮ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ জন সাংবাদিককে চীন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিবিসি এবং অস্ট্রেলিয়ার চারজন সাংবাদিককে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার টেলিভিশন অ্যাঙ্কর চেং লি এবং ব্লুমবার্গের চীনা সাংবাদিক হেজ ফ্যানকে গ্রেফতার করা হয়েছে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।