চীনে ফের করোনাভাইরাসের প্রকোপ, হারইনে কঠোর লকডাউন
চীন আরেক দফায় করোনাভাইরাসের বিস্তার রুখতে হিমশিম খাচ্ছে।এবার করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে ১ কোটি মানুষের শহর হারইনে। সংক্রমণ ঠেকাতে সেখানে কড়া লকডাউনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হেইলোংজিয়াং প্রদেশের রাজধানী হারইন সেখানকার সবচেয়ে বড় শহর। বুধবার শহরটিতে গাড়ি চলাচল এবং লোকসমাগমে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
আবাসিক কম্পাউন্ডগুলোতে বাইরে থেকে আসা কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সরকারি এক নোটিশে বলা হয়েছে, আবাসিক এলাকাগুলোতে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় লোকজনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং তাদের স্বাস্থ্যও খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হবে।
চীনের হেইলোংজিয়াং প্রদেশটি সঙ্গে রাশিয়ার সীমান্ত আছে। ফলে রাশিয়া থেকে আসা নাগরিকদের মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত করা এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে সংক্রমণ রোধে সেখানে রীতিমত লড়াই করতে হচ্ছে।
চীনের বাইরে থেকে আসা মানুষের মাধ্যমেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং প্রদেশটি চীনে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় উপকেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
হারইনে মঙ্গলবার নতুন ৭ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বাড়তি আরো তিন করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষ রাশিয়া থেকে এসেছে। সবমিলিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে প্রায় ১৪শ’ জনকে।
এ মাসের শুরুর দিকে করোনাভাইরাস ঠেকাতে চীন সাময়িকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে সব স্থলসীমান্ত বন্ধ করেছিল।
একই সময়ে হেইলোংজিয়াং প্রদেশের হারইন এবং সুইফেন শহর বিদেশ থেকে আগতদের ৪ সপ্তাহ আলাদা করে রাখা এবং করোনাভাইরাস পরীক্ষাও শুরু করে। হারইনে ১৪ দিনে লকডাউনের পদক্ষেপও নেওয়া হয়।
কিন্তু হারইনে বন্ধ করা হয়নি রাশিয়া থেকে আসা ফ্লাইটগুলো। বুধবার সেখানে মোট করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫ জনে। এর মধ্যে ২৩ জনের দেহে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।
সুইফেন শহরটিও রাশিয়ার বন্দর শহর ভ্লাদিভোস্তক থেকে মাত্র ১২০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় সেটিও করোনাভাইরাসের নতুন হটস্পট হয়ে উঠেছে। গত ১৬ এপ্রিলেই শহরটিতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩২২ জন। এদের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আসা। এ শহরেও গত ৮ এপ্রিলে লকডাউনের ঘোষণা করা হয়।
ওদিকে, চীনা মূল ভূখন্ডে মঙ্গলবার নতুন আক্রান্ত পাওয়া গেছে ৩০ জন। এর মধ্যে ২৩ জনই বহিরাগত। একদিন আগের তুলনায় এ সংখ্যা ১১ জন বেশি।
সব মিলিয়ে চীনে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ হাজার ৭৮৮ এবং মারা গেছে ৪ হাজার ৬৩২ জন।