চীনের সামরিক মহড়ার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানল জাপানে
তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর চলমান মহড়ায় ব্যবহার করা কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের সমুদ্রসীমার একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন-ইইজেড) আঘাত হেনেছে বলে অভিযোগ করেছেন জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নোবুও কিশি।
বৃহস্পতিবার রাজধানী টোকিওতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘চীনের প্রতিরক্ষাবাহিনী বৃহস্পতিবারের মহড়ায় ৯টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর মধ্যে ৫টি আঘাত হেনেছে জাপানের ওকিনাওয়া অঞ্চলের হাতেরুমা দ্বীপের কাছে। সাগরের যেসব জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছে, সেসব এলাকা জাপানের সমুদ্রসীমার ইইজেড অঞ্চলের আওতাভুক্ত।’
জাপানের সর্ব দক্ষিণের প্রশাসনিক অঞ্চল ওকিনাওয়া তাইওয়ানের খুব কাছে অবস্থিত। এই প্রথম চীনের কোনো ব্যালাস্টিক মিসাইল জাপানের সমুদ্রসীমায় পড়েছে বলে জানান নোবুও কিশি।
একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল জাপানের উপকূলরেখা থেকে দুইশ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত। ওই অঞ্চল দেশটির আঞ্চলিক জলসীমার বাইরে।
ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এসে পড়েছে সমুদ্রের পানিতে এবং এই ঘটনায় এ পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে নিজেদের সমুদ্রসীমায় চীনা ক্ষেপণাস্ত্রের এই আঘাত হানাকে সহজভাবে নেয়নি জাপান।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, মন্ত্রণালয়লের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তবে চীনের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া আসেনি।
চীন সাড়া না দিলেও প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান। নোবুয়ো কিশি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য রীতিমতো হুমকি। আমরা কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহারের মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানাব।’
পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে সফরের উদ্দেশে সোমবার ওয়াশিংটন থেকে সিঙ্গাপুরে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। সিঙ্গাপুর সফর শেষ করে তাইওয়ানে যান তিনি।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানী তাইপেতে অবতরণ করে পেলোসিকে বহনকারী মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর উড়োজাহাজ।
এদিকে, পেলোসির সফরের আগে থেকে বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসা চীন স্বাভাবিকভাবেই এ সফরে ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি তাইওয়ান ত্যাগ করার কয়েক ঘণ্টা পরই তাইওয়ান ঘিরে থাকা তাইওয়ান প্রণালীতে ইতিহাসের বৃহত্তম সামরিক মহড়া শুরু করে চীন।