চীনের সঙ্গে মতের অমিল দূর করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে: জাসিন্ডা
চীনের সঙ্গে মতপার্থক্য দূর করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। এর জন্য বিশ্বের একটি ক্রমবর্ধমান শক্তি হিসেবে চীনকে তার দায়িত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষ করে উইঘুর মুসলিমদের প্রতি আচরণ নিয়ে দেশের ভেতরে-বাইরে সবদিক দিয়েই বেশ চাপের মুখে রয়েছে জাসিন্ডার সরকার। উইঘুরদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে কি না তা নিয়ে আলোচনার জন্য গত সপ্তাহে নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে ডানপন্থী রাজনৈতিক দল অ্যাক্ট পার্টি।
সোমবার চায়না বিজনেস সামিটে রাখা ভাষণে জাসিন্ডা বলেন, সম্পর্ক পরিচালনা সবসময় সহজ হয় না এবং এর কোনো গ্যারান্টিও নেই। আমাদের এটি স্বীকার করতে হবে যে, কিছু বিষয় রয়েছে যার ওপর চীন এবং নিউজিল্যান্ড একমত নয়, হতে পারে না এবং হবেও না।
তিনি বিশেষভাবে জিনজিয়াং পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, উইঘুরদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আমরা প্রকাশ্যেই গভীর উদ্বেগের কথা বলেছি।
এসময় হংকংবাসীর অধিকার, স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসনের বিষয়ে নেতিবাচক ঘটনাক্রম নিয়েও নিউজিল্যান্ডের উদ্বেগের কথা জানান এ নেতা।
নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। পরবর্তী চার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানে গত বছরের নভেম্বর থেকে মোট যে পরিমাণ পণ্য রফতানি করেছে নিউজিল্যান্ড, তারচেয়ে বেশি করেছে এক চীনেই। এ অবস্থায় জাসিন্ডার মুখে চীনা প্রশাসনের সমালোচনায় পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে চীনবিরোধী অবস্থায় নেয়ায় তাদের ওপর শুল্কবৃদ্ধি, আমদানি নিষেধাজ্ঞা, ভ্রমণ সতর্কতার মতো কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল বেইজিং। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের ঘোষিত-অঘোষিত নিষেধাজ্ঞাগুলোর কারণে গত বছর অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ৪৭ বিলিয়ন অস্ট্রলীয় ডলার ক্ষতি হয়েছে।
অবশ্য চীনের সঙ্গে মতপার্থক্য একেবারে অপরিবর্তনীয় বলে মনে করছেন না জাসিন্ডা আরডার্ন। তিনি বলেছেন, এটি আমাদের সম্পর্ককে লাইনচ্যুত করবে না। এটি শুধুই বাস্তবতা।
জাসিন্ডা বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলার মতো ক্ষেত্রগুলোতে চীন ও নিউজিল্যান্ডের এখনো একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।