November 27, 2024
আন্তর্জাতিক

চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ

দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ক উচ্চ ঝুঁকির সময় পার করছে। মহামারির শুরু থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‌‘কোভিড-১৯ চীনের তৈরি’ এমন মন্তব্য করে আসছেন। জবাবে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। দু’দেশের চলমান বিরোধের পরিসর ক্রমে বাড়ছে।

এবার যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তুলেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত মার্কিন গবেষণা হাতিয়ে নিতে চীন নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে তারা যতো ঘটনা তদন্ত করছে, সেগুলোর প্রায় অর্ধেকই চীন সম্পর্কিত।

সম্প্রতি এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফার রে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যসেবামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ওষুধ কোম্পানি, গবেষণাধর্মী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে নজর রয়েছে চীনের। তারা এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত মার্কিন গবেষণা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

তিনি জানান, বর্তমানে এফবিআই প্রায় পাঁচ হাজার ঘটনা তদন্ত করছে। এর মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার চীন সম্পর্কিত। ‘আমরা এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি যে, প্রতি ১০ ঘণ্টায় চীনের বিরুদ্ধে একটি করে ঘটনার তদন্তে নামতে হচ্ছে।’

চীন কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে—এমন প্রশ্নের জবাবে এফবিআই পরিচালক বলেন, ‘মার্কিনিদের জানা দরকার যে, উদ্দেশ্য পূরণের জন্য চীন সাইবার হামলাসহ সম্ভাব্য সব ধরনের পন্থাই অবলম্বন করছে। এমনকি সশরীরে কাউকে পাঠিয়ে নথি চুরির চেষ্টাও করছে তারা।’

ক্রিস্টোফার বলেন, ‘চীন শুধু তাদের গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদেরই ব্যবহার করছে না। রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, তথাকথিত কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্নাতকোত্তর পর্যায়ের নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থী, গবেষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে তারা।’

এফবিআই পরিচালকের অভিযোগ, ‘নিজেরা উদ্ভাবনের দিকে মনোযোগ না দিয়ে চীন প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য চুরি করে। এরপর এসব তথ্য তারা প্রয়োগ করে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেই। বলা যায়, তথ্য চুরির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দু’বার প্রতারণা করছে চীন।’

ক্রিস্টোফার রে মনে করেন, চীন সরকার ও ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি আন্তর্জাতিক আইন ও শিষ্টাচার লঙ্ঘন করছে। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ‘ফক্স হান্ট’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেন। বেইজিং বলছে, দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে তারা এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিরোধীদের দমন করতেই প্রকল্পটি হাতে নিয়েছেন জিনপিং।’

ক্রিস্টোফার নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেন, ‘আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হন, তাহলে ধরেই নিতে পারেন আপনার ব্যক্তিগত অনেক তথ্য হয়তো চীনের হাতে চলে গেছে।’

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *