চালকরা জরিমানা মওকুফের আবেদন করলে মাফ করা হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
গাড়িচালকরা ট্যাক্স-টোকেনের জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন জমা দিলে এবারের মতো মাফ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, আইনের সব কিছু প্রয়োগ হয়ে গেছে, শুধু দুই থেকে তিন জায়গায় আগামী জুনের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময়সীমা বর্ধিত করা হয়েছে। আইন স্থগিত করা হয়নি, কোনো কিছু স্থগিত করা হয়নি, সবই চলবে।
তিনি বলেন, আইন বাস্তবায়নে নতুন করে চার সচিবের নেতৃত্বে চারটি উপ-কমিটি করা হয়েছে। তারা আগামী দুই মাসের মধ্যে সুপারিশ ও অ্যাকশন প্ল্যানসহ প্রতিবেদন জমা দেবেন। পরে টাস্কফোর্স কমিটির সভায় আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে টাস্কফোর্স কমিটির প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইন কিন্তু ইমপ্লিমেন্ট হয়ে গেছে। কয়েকটি বিষয়ে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে। যেমন- আমরা বিআরটিএ লাইসেন্স নবায়ন করতে পারিনি, এর জন্য অ্যাকশন প্ল্যান শুরু করেছি। লাইসেন্স না দিলে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো। কয়েকটি জায়গায় ৩০ জুনের মধ্যে সেরে নিতে হবে। পরিবহন মালিকদের বিভিন্ন যানবাহনের আকার নিয়ে যে সমস্যা রয়েছে সেটিও সমাধান করা হবে। তারা ডিফল্ডার হয়ে গিয়েছিল, ট্যাক্স-টোকেনের বিষয়ে আবেদন জমা দিলে আশা করি জরিমানা এবারের মতো মাফ করা হবে।
সড়ক পরিবহন আইনের কিছু স্থানে গাড়ি চালকরা পরিবর্তন চেয়েছেন সেখানে কি করতে যাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চালকরা বলছেন নতুন আইনের জরিমানা দেওয়া সম্ভব না, আইনে মৃত্যুদণ্ডের কথা লেখা নেই। অপরাধ করলে কত বছর সাজা হবে এবং জরিমানা হতে পারে সর্বোচ্চ তা লেখা আছে। তা কমার কোনো প্রশ্ন আসে না, সর্বোচ্চ লিমিট বিচারক ব্যবস্থা নেবেন, আমরা সিলিং দিয়েছি সর্বোচ্চ, তিনি ইচ্ছা করলে কোন জায়গায় যেতে পারেন সেটা তার এখতিয়ার। জামিন অযোগ্যর বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এটি বৃহৎ আকারে আলোচনা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টাস্কফোর্স কমিটির কাজটি ছিল পরিবহনখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও এখানে যে অসুবিধা ছিল যেগুলোর একটি বাস্তবমুখী সমাধান করা এবং সব দুর্ঘটনা নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা। আজ সেই কমিটির প্রথম সভা হলো। সভায় সৈয়দ আবুল মকসুদ ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খানের করা ১১১ সুপারিশমালা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সুপারিশ বাস্তবায়নে চারটি উপ-কমিটি করা হয়েছে। যার নেতৃত্ব দেবেন চারজন সচিব। তারা চিহ্নিত করবেন কোন স্থানে আমাদের দুর্বলতা আছে। এজন্য কোন স্থানে আমাদের কীভাবে কাজ করতে হবে সেই পরিকল্পনা তারা দেবেন। আমাদের দুর্বল পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিআরটিএ-কে আরো শক্তিশালী করতে হবে। তাদের দুর্বলতাগুলোকে কমাতে হবে। সেজন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানকে এখাতে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।
চারটি কমিটির মধ্যে একটি সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিবের, একটি স্থানীয় সরকার সচিবের, একটি তথ্য সচিবের ও একটি জনপ্রশাসন সচিবের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে।
তিনি বলেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে তারা তাদের সুপারিশ ও অ্যাকশন প্ল্যান জমা দেবেন। সে অনুযায়ী দুই মাস পড়ে আবার টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এই সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রী সড়কে একটি সুন্দর পরিবেশ আনতে চান। সে অনুযায়ী কীভাবে কাজ করতে হবে তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।
সুপারিশ বাস্তবায়নে আমরা বেশি সময় নিয়ে ফেলছি কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাস্কফোর্স গঠন হয়েছে বেশিদিন না, ১৬ অক্টোবর গেজেট হয়েছে। এখানে টাস্কফোর্সে কোনো সময় নষ্ট হয়নি। বিআরটিএ দুর্বলতা কাটাতে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট, রাস্তাঘাট সংস্কার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে। জনসচেতনার জন্য তথ্য সচিব কাজ করবেন। স্থানীয় সরকারের অধীনে যে সড়ক রয়েছে তা স্থানীয় সরকার সচিব দেখবেন।