চার মাস পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেন এটিএম শামসুজ্জামান
প্রায় চার মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বাসায় ফিরেছেন কিংবদন্তি অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। এদিন দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে তিনি তার মেয়ের বাসায় উঠেছেন।
বাসায় ফিরলেও চিকিৎসক এটিএম শামসুজ্জামানকে টানা এক মাস সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ভাই সালেহ জামান সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘নিজ বাসায় ফিরলে ভাইকে (এটিএম শামসুজ্জামান) দেখতে অনেক মানুষ ভিড় করবে। যার ফলে ওনার বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই হাসপাতাল থেকে ওনার মেয়ের বাসায় আপাতত নেওয়া হয়েছে। সেখানেই সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকবেন তিনি। আপাতত কথা বলা বা বাহিরে যাওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসক নিষেধ করেছেন।’
‘তার শারীরিক সমস্যাগুলো এখন নাই বললেই চলে। এখন সবকিছু স্বাভাবিক আছে। সুস্থ হয়েই বাসায় ফিরেছেন তিনি। তবে আপাতত কাজে ফিরতে পারছেন না। বিশ্রামেই থাকবেন,’ যোগ করেন তিনি।
চলতি বছর ২৬ এপ্রিল রাতে হঠাৎ মলত্যাগজনিত সমস্যায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এটিএম শামসুজ্জামানকে রাজধানীর গেণ্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকালে তার পিত্তথলিতে সফল অস্ত্রোপচার করা হয়।
কিন্তু বর্ষীয়ান এই অভিনেতার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বেশ কয়েকবার লাইফ সাপোর্টেও রাখা হয়।
এরপর ১৩ মে এটিএম শামসুজ্জামানের চিকিৎসার সব ধরনের দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়।
আজগর আলী হাসপাতাল থেকে ১৫ জুন বিএসএমএমইউ হাসপাতালে এটিএম শামসুজ্জামানকে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে প্রায় আড়াই মাস তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে এটিএম শামসুজ্জামান জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬১ সালে উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। প্রথম চিত্রনাট্যকার হিসেবে তিনি কাজ করেছেন ‘জলছবি’ সিনেমায়। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনী লিখেছেন বর্ষীয়ান এ অভিনেতা।
১৯৬৫ সালে অভিনেতা হিসেবে এটিএম শামসুজ্জামানের সিনেমায় অভিষেক ঘটে। ১৯৭৬ সালে আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। সিনেমার পাশাপাশি অসংখ্য খণ্ড নাটক ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি।
একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য এ অভিনেতার একমাত্র পরিচালিত সিনেমা ‘এবাদত’। এখন পর্যন্ত পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এ কিংবদন্তি। কাজী হায়াতের ‘দায়ী কে’ সিনেমার জন্য দুটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান তিনি। এরপর ‘চুড়িওয়ালা’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’ এবং ‘চোরাবালি’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য একই পুরস্কার লাভ করেন এটিএম শামসুজ্জামান।