চার্জ ছাড়াই চলবে যে ই-কার
বিশ্বে বর্তমানে ই-কারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। জনপ্রিয়তা বাড়ছে বৈদ্যুতিক গাড়ির। একদিকে পরিবেশ রক্ষা অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না গ্রাহকদের। আবার বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ দিতে খরচও কম।
তবে এবার বাজারে এলো সোলার কার। যেটাতে গ্রাহকের খরচ কমবে আরও বেশি। নেদারল্যান্ডের ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লাইটইয়ার সম্প্রতি বাজারে এনেছে নতুন ইলেকট্রিক গাড়ি। এই গাড়িটিকে ইলেকট্রিক গাড়ি না বলে সোলার কার বলাই ভালো। কেননা, এটাই কোম্পানির প্রথম সৌর শক্তি চালিত গাড়ি। বৈদ্যুতিক চার্জ ছাড়াই চলবে ৭ মাসের বেশি সময়। সরাসরি সূর্য থেকেই শক্তি আহরণ করবে গাড়িটি।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বলছে, বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্যই এই গাড়ি তৈরি করা হয়েছে। লাইটইয়ার জিরো মডেলের এই গাড়িতে থাকছে ৬০ কিলোওয়াট আওয়ারের ব্যাটারি প্যাক।
এক চার্জে ৬২৫ কিলোমিটার ছুটবে গাড়িটি। এর মধ্যে ৬০ কিলোমিটার চলার শক্তি সৌর শক্তির মাধ্যমে পাবে এই গাড়ি। গাড়িটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার। ০-১০০ কিলোমিটার গতি তুলতে সময় নেবে মাত্র ১০ সেকেন্ড।
গাড়িটির মোটরে সর্বোচ্চ ১৭৪ পিএস শক্তি পাওয়া যাবে। এর চাকার মধ্যেই মোটর ব্যবহার করা হয়েছে। অনেকটা ইলেকট্রিক সাইকেলের হাব মোটরের মতো। কোম্পানির দাবি এক বছরে কোনো খরচ না করেই ১১ হাজার কিলোমিটার চলতে পারবে গাড়িটি।
গাড়িটিতে ৫৪ বর্গফুট জায়গায় সোলার প্যানেল ব্যবহার হয়েছে। গাড়ির বনেট, ছাদ ও পেছনে সোলার প্যানেল রয়েছে। সূর্যের আলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করে গাড়ি ব্যাটারি চার্জ করতে সাহায্য করবে প্যানেলগুলো।
অনন্য ডিজাইন ও প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে এই গাড়ি গোটা দুনিয়ার নজর কেড়েছে। সঠিক পরিস্থিতি থাকলে কোনো ব্যক্তি যদি প্রতিদিন ৩৫ কিলোমিটার যাতায়াত করেন তাহলে ৭ মাস একটানা চার্জ না করে প্রতিদিন এই গাড়ি চালানো যাবে।
এদিকে যেসব দেশে ভালো সূর্যের আলো পাওয়া যায় না, সেসব দেশে ২ মাস টানা এই গাড়ি চার্জ না করে প্রতিদিন ৩৫ কিলোমিটার চালানো সম্ভব হবে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।
২০১৯ সালে প্রথম এই গাড়ির কনসেপ্ট মডেল সামনে এসেছিল। সেই গাড়ির থেকে বাণিজ্যিক মডেলের খুব বেশি পার্থক্য দেখা যায়নি। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে গবেষণার কাজ চলেছে গাড়িটি নিয়ে। অবশেষে বাণিজ্যিকভাবে এই গাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ হয়েছে।
কোম্পানির দাবি লাইটইয়ার জিরো বিশ্বের সবথেকে এনার্জি এফিশিয়েন্ট গাড়ি। প্রত্যেক ১০০ কিলোমিটার যাত্রার জন্য মাত্র ১০.৫ কিলোওয়াট আওয়ার শক্তি খরচ করে এই গাড়ি। হাইওয়ের গতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রয়োজ্য। গাড়িটির লম্বা ডিজাইন দেখে বোঝাই যাচ্ছে অ্যারোডাইনামিক্সের কথা ডিজাইনের সময় বিশেষভাবে মাথায় রেখেছিলেন ইঞ্জিনিয়াররা।
শিগগিরই গাড়িটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হবে। এ বছরের নভেম্বরের দিকে ক্রেতারা হাতে পাবেন সোলার ইলেকট্রিক কার।