December 22, 2024
ফিচারলাইফস্টাইল

চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য ৬ টি করণীয়!

আমরা যখন কোন সাক্ষাৎকারের মুখোমুখি হই তখন আমরা আতঙ্কিত হয়ে সবকিছু তালগোল পাকিয়ে ফেলি। আর এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে এবং আপনার সাক্ষাৎকারকে সফল করতে পারে দুইটি বিষয়ঃ আপনার আত্মবিশ্বাস ও সর্বোচ্চ প্রস্তুতি।

আমরা চাকরির সাক্ষাৎকারের ব্যাপারে ভয়ে ভয়ে থাকলেও আসলে এই ভয়ই চাকরির সাফল্যের চাবিকাঠি। কেননা ভয় থেকেই আসে সতর্কতা। আর এই সতর্কতাই আপনাকে সাহায্য করবে সঠিক মনোভাব ও আচার আচরণ গড়ে তুলতে যার ফলে সাফল্য আপনার হাতের মুঠোয় এসে ধরা দেবে।

এই টিপস গুলো আপনাকে সাহায্য করবে নার্ভাসনেস কাটিয়ে উঠে শান্ত থাকতে এবং গুরুত্বপূর্ণ দিকে দৃষ্টি রেখে সাফল্য পেতে। তো চলুন দেখে নেয়া যাক…

১) পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ

খুঁজে বের করুন কোম্পানির লক্ষ্য, দৃষ্টিভঙ্গি, কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট ও প্রোডাক্ট সম্পর্কে সব তথ্য। সেটা হতে পারে কোম্পানির ওয়েবসাইট বা যে কোন সোর্স থেকে। তারপর আপনার জব ডেসক্রিপশন ভাল করে পড়ুন এবং নিজেকে যাচাই করুন একজন প্রার্থী হিসেবে আপনি কতটুকু যোগ্য। আপনি খুব ভালো প্রস্তুতি নেবার পরেও সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব হবে না, বেশ কিছু প্রশ্ন হবে আপনার আওতার বাইরে।তবে কিছু কমন ব্যাপার রয়েছে যেগুলো আয়ত্ত করলে আপনি সাক্ষাৎকার যুদ্ধে অর্ধেক এগিয়ে যাবেন।

২) জীবন বৃত্তান্তের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করুন

জীবন বৃত্তান্তে(resume) যে বিষয় সমূহ উল্লেখ করবেন সেগুলোর সাথে আপনার খুব ভালো পরিচয় থাকতে হবে। আর নিজেকে জীবন বৃত্তান্তে প্রকাশ করুন আকর্ষণীয়ভাবে। এখানে উল্লেখ করতে হবে আপনার চাকরির ইতিহাস, পেশাগত অর্জন, আপনার দক্ষতা আর আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য।

৩) আত্মবিশ্বাসীর মত আচরণ করুন

যদিও আপনার নিজেকে খুব আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে না, তবুও আচরণ করুন আত্মবিশ্বাসীর মত। সাক্ষাৎকারের সময় আপনাকে হতে হবে পজেটিভ ও আত্মবিশ্বাসী। চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন এবং সাক্ষাৎকারের বোর্ড কর্তাদের চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। এতে নিজেকে নিজের কাছে আত্মবিশ্বাসী মনে হবে এবং কর্তা ব্যক্তিদের কাছেও আত্মবিশ্বাসী হিসেবে উপস্থাপিত হবেন। মনে করুন আপনার হারানোর কিছু নেই, এই মনোভাব নিয়ে সাক্ষাৎকার বোর্ডে উপস্থিত হন। এতে আপনি মানসিক ভাবে ফ্রি থাকতে পারবেন।

৪) পর্যাপ্ত ঘুম

সাক্ষাৎকারের আগের রাতের ঘুম অতি জরুরী যা আপনাকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে তরতাজা রাখবে। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রস্তুতির পরিকল্পনা ত্যাগ করা যাবে না। প্রস্তুত হন সাক্ষাৎকারের ড্রেস নিয়ে।যে জুতো ব্যবহার করবেন তা ভালো ভাবে পালিশ করে নিন। মেয়েরা অবশ্যই নখ ছোট করে নিবেন এবং আপনার উচিৎ হবে নেইল পলিশ নখে ব্যবহার না করা বা ব্যবহার করে থাকলেও রিমুভ করে নেয়া। দেরি করে খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সাক্ষাৎকারে সাফল্য পেতে নিজেকে শান্ত ও হাসিখুশি রাখুন।

 ৫) সময়মত পৌঁছান

সাক্ষাৎকার পথের যাত্রা আপনার জন্য ক্লান্তিকর ও চাপের হতে পারে যদি আপনি দীর্ঘ দূরত্বে থাকেন। চেষ্টা করুন এক দিন আগেই সাক্ষাৎকার এলাকার কাছাকাছি থাকতে যাতে করে আপনি জানেন কত সময় লাগবে সেখানে পৌঁছোতে। এভাবে আপনি আপনার সময় ও সুবিধামত পরিকল্পনা করতে পারেন। মনে রাখবেন, দেরি করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে ঢোকাটা ক্ষমার অযোগ্য যা আপনি কোন অজুহাত দিয়েই ঢাকতে পারবেন না।

৬) বুকভরে শ্বাস নিন

যদি আপনাকে অপেক্ষা করতে হয় তবে এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি পান করুন এবং গভীরভাবে শ্বাস নিন ও ধীরে ধীরে ছাড়ুন, দেখবেন ভালো লাগবে। এতে আপনার গলার স্বর স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রিত থাকবে এবং শরীর থাকবে রিল্যাক্সড। মনে মনে প্রস্তুত হতে পারেন যেমন-সেখানে গিয়ে নিজের ব্যাপারে কী বলবেন। এটা খুবই জরুরি, কেননা এটা আপনাকে অপেক্ষার সময় কাটাতে ও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে সংশয়গ্রস্থদের মত লাগবেনা।

অবশেষে, এটা না বললেও চলে যে, রিল্যাক্সড হন এবং অতিরিক্ত চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। মনে রাখুন, এই সাক্ষাৎকার উভয়ের জন্যই দরকার। আপনার এবং চাকরিদাতার উভয়ের প্রয়োজনেই এই সাক্ষাৎকারের আয়োজন। সুতরাং খোলা ও শান্ত মন নিয়ে এগিয়ে যান এবং সফলতা ছিনিয়ে আনুন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *