চন্দ্রযান-২: ল্যান্ডারের অবস্থান জানতে পেরেছে ইসরো
চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের পিঠে যেখানে পড়েছে, সেই জায়গাটি সনাক্ত করার কথা জানিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)।
ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিভান রোববার বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, চাঁদ ঘিরে ঘুরতে থাকা চন্দ্রযানের অরবিটার হারিয়ে যাওয়া বিক্রমের একটি থার্মাল ইমেজও পাঠিয়েছে।
দীর্ঘ ৪৭ দিনের যাত্রা শেষে শনিবার প্রথম প্রহরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা ছিল চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রমের।
কথা ছিল, ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারলে চন্দ্রযান-২ এর রোভার প্রজ্ঞান নতুন তথ্য পাঠাবে পৃথিবীতে। সেখান থেকে হয়ত জানা যাবে, চাঁদের বুকে কতটা পানি কী অবস্থায় আছে।
কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে থমকে যায় ভারতের স্বপ্ন, চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার দূরে থাকতে বিক্রমের সঙ্গে ইসরোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
কে শিভান বলেন, অর্বিটারের পাঠানো ছবি থেকে তারা অবস্থান জানতে পারলেও বিক্রমের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করতে পারেননি।
“ওই অবস্থায় নিশ্চয় চাঁদের ওপর আছড়ে পড়েছে বিক্রম।… আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যোগাযোগ আবার চালু করার।”
বিক্রম কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এ পর্যায়ে বলা কঠিন বলে মন্তব্য করেন ইসরো চেয়ারম্যান।
চাঁদের ওই অংশটি এখনও মানুষের কাছে অজানা। সেখানে জমাট বরফ আকারে পানি থাকার বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছিলেন ভারতের চন্দ্রযান-১ অভিযান থেকে।
চাঁদে নিয়ন্ত্রিত অবতরণের মিশন সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর তালিকায় চতুর্থ দেশ হিসেবে নাম লেখাতে পারত ভারত। প্রজ্ঞান ঠিকমত কাজ করলে ভারত হত চন্দ্রপৃষ্ঠে রোভার চালাতে সফল হওয়া তৃতীয় দেশ। আর ভারত হত চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে নিয়ন্ত্রিত অবতরণে সক্ষম হওয়া প্রথম দেশ।
সেই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ইসরো চেয়ারম্যান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিশনের শেষ পর্যায়ের কাজগুলো যেভাবে করা উচিৎ ছিল, তা ঠিকঠাকভাবে হয়নি। ওই সময়ই ল্যান্ডার থেকে সংকেত আসা বন্ধ হয়ে যায়।
এ যাত্রায় সফল হতে না পারলেও ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীদের নতুন অভিযানের উৎসাহ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তিনি বলেছেন, “আমরা পিছিয়ে পড়িনি… চাঁদে পৌঁছনোর জন্য আমাদের ইচ্ছাশক্তি আরও প্রবল হল, সংকল্প আরও দৃঢ় হল।”
চন্দ্রযান-২ এর তিনটি অংশের মধ্যে অর্বিটার এখন চাঁদকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। আগামী সাত বছর অর্বিটারের মাধ্যমে চাঁদের তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।