ঘূর্ণিঝড় ফণী: ওড়িশায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দুই দশকের মধ্যে ভারতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণী ৩৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে; নিহতরা সবাই ওড়িশার। ত শুক্রবার সকালে ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে ভারতের ওড়িশা রাজ্যে আছড়ে পড়ে ফণী। ফণীর আঘাতে প্রাদেশিক রাজধানী ভুবনেশ্বর এবং তীর্থ নগরী পুরী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পুরীর মেডিকেল অফিসার ব্রজবন্ধু দাস রবিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ঘুর্ণিঝড়ে পুরীতেই ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে আরো প্রায় তিনশ মানুষ। রাজ্যের অন্যান্য অংশে আরো ১২ জনের মৃত্যুর খবর আগেই পাওয়া গেছে বলে জানায় রয়টার্স।
ফণী অতি প্রবল রূপ নিয়ে আঘাত হানার আগেই ওড়িশা উপকূল থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। না হলে হতাহতের সংখ্যা আরো কয়েক গুণ বেশি হত বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।
তবে হতাহতের সংখ্যা কমানো গেলেও ফণীর তাণ্ডবে ওড়িশায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শত শত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, উপড়ে গেছে হাজার হাজার গাছ। বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে বলে রবিবার জানান কর্মকর্তারা।
ওড়িশার অনেকাংশ এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে ধ্বংসস্তুপ ছাড়া আর কিছু খুঁজে পাননি। প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, ফণীর আঘাতে ভারতের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা সারাতেই এক হাজার দুইশ কোটি রুপির প্রয়োজন হবে।
বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করতে জরুরি ভিত্তিকে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওড়িশায় তাণ্ডব চালানোর পর ফণী কিছুটা দুর্বল হয়ে পশ্চিমবঙ্গের দিকে অগ্রসর হয়।
নিরাপত্তার খাতিরে পশ্চিমবঙ্গের নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বিমানবন্দর শুক্রবার বিকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ১৭ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। পশ্চিমবঙ্গে ভারি বৃষ্টি ঝরিয়ে ফণী অনেকটাই দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপের রূপ নিয়ে মেঘালয়ের পশ্চিমাংশ এবং প্রতিবেশী বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যায়।
বাংলাদেশে ফণীর ছোবলে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, বিধ্বস্ত হয়েছে সহস্রাধিক ঘর। ভারতে ঘূর্ণিঝড় দুর্গত এলাকায় ৬০ হাজারের বেশি কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে জানিয়েছেন স্পেশাল রিলিফ কমিশনার বিষ্ণুপদ সাথী।