ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড খুলনার উপকূল
দ. প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে খুলনার উপকূলীয় এলাকা। সিডর ও আইলায় বিধ্বস্ত খুলনায় এবারও কয়েকশ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়রা উপজেলার অন্তত অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানি বেড়ে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার মাছের ঘের ও ফসলি জমি।
এছাড়া হাজার হাজার গাছ উপড়ে গেছে। সঞ্চালন লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে অনেক এলাকা। সবমিলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে গোটা উপকূলীয় অঞ্চল।
শক্তিশালী আম্পান শক্তি হারিয়ে চলে গেলেও গোটা পশ্চিম উপকূলে রেখে গেছে ক্ষতচিহ্ন। সড়কে বড় বড় গাছ পড়ে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যায় প্রবল গতিতে খুলনাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে আম্পান । রাতভর চলে ঝড়ের তাণ্ডব। প্রচণ্ড শক্তিশালী এ ঝড়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে উপকূলীয় গোটা এলাকা। ঝড়ের তাণ্ডবে সন্ধ্যা থেকে খুলনায় বিদ্যুৎ বিছিন্ন রয়েছে প্রায় সব এলাকা। ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় শহরসহ গোটা উপকূলজুড়ে নেমে আসে অন্ধকার। পুরো ভূতুড়ে অন্ধকারেই ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালায়।
বাতাস ও বড় বড় নদীগুলোর জোয়ারের তোড়ে খুলনার কয়রা উপজেলার ১১টি জায়গায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে কয়রা সদর, উত্তর বেদকাশি, দক্ষিণ বেদকাশি, মহারাজপুর ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে গাছপালা, কাঁচা ঘরবাড়ি, রাস্তা ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি মো. আবু সাঈদ খান বলেন, কয়রায় ৮টি পয়েন্ট দিয়ে বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে অনেকের বসতবাড়িতে পানি ওঠে। জোয়ার শেষে পানি নেমে যায়। কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা স্লুইচ গেটের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী বর্ষণে ধানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উপকূলীয় উপজেলা পর্যায়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং গাছপালা উপড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার বৃহস্পতিবার ভোরে বলেন, খুলনায় ২ লাখ ৭ হাজার মানুষ ৮১৪টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেন। ঘূর্ণিঝড়ে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙেছে বেড়িবাঁধ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা দুপুর নাগাদ ক্ষয়ক্ষতি তথ্য জানালে সঠিক পরিসংখ্যান জানা যাবে।