November 24, 2024
জাতীয়

ঘুষ নয়, বিজ্ঞাপন : নাজমুল হুদা

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঘুষের অভিযোগের তদন্তে দুদকে সাড়ে ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর নাজমুল হুদা বলেছেন, তাকে এই মামলায় ‘ফাঁসানো’ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু রক্ষণাবেক্ষণ কাজে কোনো ঘুষ নেননি দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ওই টাকা তার স্ত্রীর সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘খবরের অন্তরালে’ পত্রিকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন বাবদ নেওয়া হয়েছিল।
গতকাল বুধবার ঢাকার সেগুন বাগিচায় দুদকের ঢাকা-১ এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ১০ বছর আগে করা এ মামলায় নাজমুল হুদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম।
খালেদা জিয়ার ২০১ সালের সরকারে যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদা বিএনপি ছেড়ে আসার পর এখন তৃণমূল বিএনপি গঠন করে আওয়ামী লীগের পাশে আছেন। তার স্ত্রী আইনজীবী সিগমা হুদা খবরের অন্তরালে নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করতেন।
নাজমুল হুদা বলেন, যমুনা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে কিছু বিজ্ঞাপন ‘খবরের অন্তরালে’তে ছাপা হয়। ওই বিজ্ঞাপনের বিল হিসেবে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ কোম্পানি মর্গানেট ওয়ান লিমিটেড প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা করে বিল পরিশোধ করেছে। ওই বিলের মোট ছয় লাখ টাকা খবরের অন্তরালে পত্রিকার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়।
তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় সেনা সমর্থিত সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই ছয় লাখ টাকাকে ঘুষ হিসেবে উলে­খ করে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। আমাকে নাজেহাল করার উদ্দেশ্য নিয়ে ওই সময়ের তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা জেনারেল আব্দুল মতিনের হস্তেক্ষেপে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
দুর্নীতির অভিযোগ এনে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। পরবর্তীতে মামলাটি বাতিলের জন্য হাই কোর্টে আবেদন করা হলে আদালত মামলাটি বাতিল করেছিলেন। পরে বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে দুদক লিভ টু আপিল করে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি নাজমুল হুদা তার মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে দায়ী করেন। বাতিল হওয়া দুর্নীতির ওই মামলা সাবেক প্রাধান বিচারপতি এসকে সিনহা পুনরুজ্জীবিত করেন। এরপর উচ্চ আদালত মামলাটি বাতিলের আদেশ খারিজ করে দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিত দুদক মামলাটি তদন্ত শুরু করেছে।
যমুনা সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার এই মামলার তদন্তে গত ২৪ ফেব্র“য়ারি নাজমুল হুদাকে তলব করে নোটিস দেয় দুদক। নাজমুল হুদা মন্ত্রী থাকাকালে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ওই ছয় লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১৮ জুন মতিঝিল থানায় মামলাটি করে দুদক।
মামলায় অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু (যমুনা) সেতুর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মার্গানেট ওয়ান লিমিডেটের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক থেকে আসামিরা বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে ঘুষ নেন। দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক বেলাল হোসেন মামলায় নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে আসামি করেন।
এজাহারে বলা হয়, তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদা মার্গানেট ওয়ানের কাছে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করে তা ‘খবরের অন্তরালে’ পত্রিকার হিসাব নম্বরে জমা দিতে বলেন। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিমাসে ২৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়েছিল। এরপর তারা ১৯টি চেকের মাধ্যমে ছয় লাখ টাকা দেয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *