গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জনবিরোধী: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে জ্বালানি গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে জনবিরোধী সিদ্ধান্ত। সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিলে প্রমাণ হবে দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনও দরদ নেই’।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রতি দেশের গ্যাস উৎপাদন কোম্পানিগুলো বর্তমান মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বাড়িয়ে গ্যাসের মূল্য পুনঃনির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে।
এ বিষয়ে কাদের বলেন, ‘বর্তমানে পাইপলাইনে সরবরাহ করা গ্যাসে দুই চুলার জন্য গ্রাহককে মাসে ৯৭৫ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। কিন্তু গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাতে দুই চুলার মাসিক বিল দাঁড়াবে দুই হাজার ১শ টাকায়। একইসঙ্গে আবাসিক গ্রাহকদের ঘন মিটার প্রতি নয় টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে’।
‘আবার সার ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম চার টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে নয় টাকা ৬৬ পয়সা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে হোটেল-রেস্তোরাঁয় ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সিএনজিতে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহা বিপর্যয় ডেকে আনবে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই বাড়তি মূল্য দেশের মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হবে, যা তাদের জীবনকে অসহনীয় করে তুলবে’।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘এমনিতেই গ্যাসের বিল পরিশোধ করার পরও রান্নার জন্য লাইনে গ্যাস পায় না সাধারণ মানুষ। সে জন্য নিয়মিত গ্যাসের বিল দেওয়ার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক চুলাও ব্যবহার করছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত খরচ করে কাঠের চুলাও ব্যবহার করছেন’।
‘অপরদিকে, করোনাকালে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। ইতোপূর্বে তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। নিত্যপণ্যের মূল্য দিনে দিনে আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থায় গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হলে জীবন বাঁচাতে মানুষের মাঝে হাহাকার উঠবে’।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়লে রফতানি পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। তাতে দেশের গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প হুমকির মুখে পড়তে পারে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বায়িং প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ ফেরাতে পারে বাংলাদেশ থেকে। এটি মহা বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। সব মিলিয়ে এ সময় গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হবে হঠকারী ও দুঃখজনক’। মেগা প্রজেক্টের বিপুল ব্যয় স্থগিত রেখে হলেও এ মুহূর্তে গ্যাসের মূল্য বাড়ানো বন্ধ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।