গুলশান হামলার মামলায় ১০০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
গুলশান হামলার আলোচিত মামলার বিচার শুরুর পর নয় মাসে ১০০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এই মামলায় মোট সাক্ষী ২১১ জন; ফলে এখনও ১১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি রয়েছে।
ঘটনার আড়াই বছর পর ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তিন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়ার মধ্য দিয়ে ১০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হল।
এই তিন সাক্ষী হলেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক সাদিয়া ইসলাম স্বর্ণা, নাদিম মহবুব এবং পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক সফিউদ্দিন শেখ।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ওই চিকিৎসকরা আক্রমণের ঘটনার পর আহত বা মুমূর্ষুদের যে ওয়ার্ডে ভতি করা হয়, সে ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন। আর ওই পুলিশ কর্মকর্তা কয়েকটি আলামত জব্দ করেন এবং একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেন।
আসামিদের পক্ষে পুলিশ কর্মকর্তাকে জেরা করা হলেও চিকিৎসকদের করা হয়নি বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এদিন সাক্ষ্যগ্রহণের পর ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দিন রেখেছেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে পাঁচ তরুণের সশস্ত্র হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে জবাই ও গুলি করে হত্যা করা হয়। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা। নজিরবিহীন ওই হামলা দেশে জঙ্গিবাদের বিপদজনক বিস্তারের মাত্রা স্পষ্ট করে তোলে। বড় ওই ধাক্কা বাংলাদেশকে বদলে দেয় অনেকখানি।
দুই বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির গত ২৩ জুলাই হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে তাদের মধ্যে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
চিহ্নিত বাকি ১৩ জন বিভিন্ন অভিযানে নিহত হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে বলা হয়, নব্য জেএমবির জঙ্গিরা ছয় মাস ধরে পরিকল্পনা করে ওই হামলা চালিয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, দেশকে ‘অস্থিতিশীল’ করা, বাংলাদেশকে একটি ‘জঙ্গি রাষ্ট্র’ বানানো।
পাঁচ তরুণের সরাসরি অংশগ্রহণে হলি আর্টিজান বেকারিতে ওই হামলায় ২০ জনকে জবাই ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন কমান্ডো অভিযানে নিহত হন হামলাকারী পাঁচ তরুণ – রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাজ ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।