গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে: ঐক্যফ্রন্ট
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বিরোধী যত রাজনৈতিক দল আছে, সব দলকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ারমাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েচেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উত্তরায় আ স ম রবের বাসায় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান।
আ স ম রব বলেন, নির্বাচনের আগে জাতির কাছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন করার প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও তা আদায় করতে পারিনি। আদায় না করা পর্যন্ত আন্দোলন ও ঐক্য অব্যাহত থাকবে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে অভিযোগ করে রব বলেন, বিষয়টি নিয়ে আপনাদের প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু এর উত্তর আজ আমরা দেবো না। আমাদের নেতা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করার পর আপনাদের মাধ্যমে জনগণের উত্তর দেবো।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে রব বলেন, আপনারা জনগণের অংশ, আমাদের অংশ। আশা করি পজেটিভ নিউজ করবেন। যা করলে জনগণের ক্ষতি না হয়।
ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, কাদের সিদ্দিকী যে চিঠি দিয়েছেন, ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের কাছে এই চিঠির উত্তর কী হবে? যদি সংসদ অবৈধ হয়, তাহলে আপনাদের দলের লোকেরা কেন গেলো
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে। তার হাসপাতালে বোমা পাওয়া গেছে। তার জীবন হুমকির মুখে। হাজার হাজার কর্মী কারাগারে। তাদের কারাগারে রেখে আমরা ঘুমাতে পারি না।
ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যুর প্রসঙ্গ উলেখ করে রব বলেন, তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। একটি নির্যাতনের বিচার হয়নি। রিপোর্ট পাওয়া যায় না। ফলে ঘুষ, দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। অন্যায় করলে বিচার হবে, এই কথা দেশের মানুষ ভুলে গেছে। অন্যায় করলে বিচার হবে, এটা বোঝাতে হবে। কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান আসম রব।
বৈঠকে অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা ৮ তারিখ পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম, কোনো উত্তর পাইনি। আজ দীর্ঘসময় আলোচনা হয়েছে, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই, যেহেতু আমাদের প্রবীণ নেতা (ড. কামাল হোসেন) অসুস্থ। বৈঠকটি মূলতবি রাখা হয়েছে।
‘এজন্য আমি আমার দলের সভায় আলোচনা করে আরো অপেক্ষা করবো। যদি সুরাহা হয় আমরা আমাদের জান-প্রাণ দিয়ে লড়াই করবো, আমরাও চাই জাতীয় বৃহত্তর ঐক্য। এখন পর্যন্ত সেই জাতীয় ঐক্যের ভিত শক্তিশালী হয়নি, এখন অবধি জাতির প্রত্যাশা আমাদের ঐক্যফ্রন্ট করতে পারেনি।’
আপনি তো বলেছিলেন ৮ তারিখ সমাধান না হলে থাকবেন না- এরকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলেছি। এ ব্যাপারে সমাধান করার জন্যই আলোচনা। আমি গত ৪ তারিখ ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছি। তারপর আজ সব দলের সঙ্গে নেতাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ড. কামাল হোসেন অসুস্থ থাকায় বিষয়টা সম্পূর্ণ হতে পারেনি। সেজন্য কিছু সময় আমাকে ধৈর্য ধরতেই হবে, আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।
আপনি আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন এরকম প্রশ্নের জবাব নাকচ করে দিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি কোনোদিন আল্টিমেটাম দেইনি। আমি প্রশ্ন রেখেছিলাম। অনেকে অনেকের মতো করেন। আল্টিমেটাম অন্য জিনিস।
এর আগে বিকাল সোয়া ৪টায় শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যায় ৬টায়। রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব। উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আবদুল মঈন খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান তালুকদার, ইকবাল সিদ্দিকী, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া, নাগরিক ঐক্যের ড. জাহেদ-উর রহমান, মমিনুল ইসলাম, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, শহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা. জাফরুলাহ চৌধুরী। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সবশেষ বৈঠক হয় গত ২৪ এপ্রিল।