November 26, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

খুলনা শহরকে অবৈধ যানবাহনমুক্ত রাখার টার্গেট ট্রাফিক বিভাগের

জয়নাল ফরাজী : খুলনা মহানগরীতে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করার টার্গেট নিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এজন্য নগরীতে অভিযান চালিয়ে লাইসেন্সবিহীন যানবাহন, হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল, ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা বৃদ্ধি করতেই এমন টার্গেট নেওয়া হয়েছে বলে অভিমত সংশি¬ষ্টদের।
জানা গেছে, কিছুদিন আগেও ইজিবাইক, ব্যাটারী চালিত রিক্সার কারণে যানজটের নগরীতে পরিণত হয়েছিল খুলনা। নগরীর গল্লামারী, সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, শিববাড়ি মোড়, শান্তিধামের মোড়, পাওয়ার হাউজ মোড়, পিকচার প্যালেস, সাত রাস্তার মোড়, পিটিআই মোড়, সদর থানার মোড়, রেলস্টেশন রোডে রাস্তার ওপর যেখানে-সেখানে রাখা হতো যানবাহন। এছাড়া যাত্রীবাহী ইজিবাইক ও মাহেন্দ্র থেকে যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামা করা হতো। বেপরোয়া গতিতে চলতো ব্যাটারী চালিত রিক্সা, যাতে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী।
নগরবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশও তাতে সায় দেয়। পরবর্তীতে গত বছরের ১৬ অক্টোবর থেকে নগরী থেকে ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর বদলে পা’য়ে চালানো প্যাডেল রিক্সা চলতে দেওয়া হয়। কিছুদিন চালকদের ক্ষোভ থাকলেও সময়ের সাথে সাথে তাও দূর হয়েছে।
এছাড়া নগরীর যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ ইজিবাইককেও আনা হয়েছে নিয়ন্ত্রণে। সিটি কর্পোরেশন থেকে দেওয়া হয়েছে লাইসেন্স। শহরের বাইরে থেকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে একই রংয়ে (উপরে লাল, বডিতে সবুজ) সাজানো হয়েছে। দুর্ঘটনা ঠেকাতে ইজিবাইকের ডানপাশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ইজিবাইক এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
আরও জানা গেছে, হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চলাচল খুলনার নিত্যদিনের চিত্র হয়ে উঠেছিল। নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নের পর খুলনায় বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালকদের ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। শুধুমাত্র হেলমেট বিহীন নয়, তিনজন আরোহী, ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ীর লাইসেন্সও যাচাই করা হচ্ছে। ফলে খুলনা শহরে হেলমেট কিংবা লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো এখন দুরূহ ব্যাপার।
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখার আহ্বায়ক এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, ‘ব্যাটারী চালিত রিক্সা বন্ধ করা সিটি মেয়রের একটি সফলতা। তবে ইজিবাইক এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তাছাড়া খুলনার সড়কজুড়ে অবৈধভাবে বাস-ট্রাক পার্কিং হচ্ছে। সুতরাং সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সকল প্রকার যানবাহনের অবৈধ পার্কিং বন্ধ করতে হবে। ট্রাফিক সিগন্যাল বাতিগুলো সচল করতে হবে। তবেই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘একটি শহরের মানুষ কতটা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ওই শহরের ট্রাফিক সুন্দর ব্যবস্থাপনা। আর সেই লক্ষ্যেই কেএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কাজ করছে। এক্ষেত্রে নগরবাসীর সহযোগীতা একান্তভাবে কাম্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘খুলনা শহরকে যানজটমুক্ত একটি সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় সকল অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হচ্ছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে খুলনা শহরের চিত্র আরও বদলে যাবে। সড়কের শৃঙ্খলা আরও বৃদ্ধি পাবে।’

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *