খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে মনোনয়ন প্রত্যাশী আ.লীগের ৫ প্রার্থী
শক্তিশালী কোনো প্রতিপক্ষ না থাকায় অনেকটা একপেশে হয়ে গেছে খুলনা জেলা পরিষদের নির্বাচন। তবুও জেলা পরিষদের সম্মানজনক চেয়ারম্যান পদ পেতে ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকেই দলীয় মনোনয়ন পেতে ফরম কিনে জমাও দিয়েছেন। দলের মধ্যে নিজের ইমেজ ধরে রাখতেও প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
নির্বাচনে একাধিক প্রার্থীর নাম এলেও মূল আলোচনায় রয়েছেন মাত্র দুজন। এরা হলেন জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুনুর রশীদ ও খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মিজানুর রহমান মিজান। এই দুজনের মধ্যে যে কোনো একজনকে বেছে নেওয়া হতে পারে এমন আলোচনা ক্রমেই জোরদার হচ্ছে দলীয় ফোরামে। রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে তাদের বিগত দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো দলের মধ্যে এ নির্বাচন নিয়ে কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বিএনপি অনেক আগে থেকেই এই নির্বাচন বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে এই নির্বাচনকে ‘পানসে’ বলে আখ্যা দিয়েছেন অনেকে। আগামী ১৭ অক্টোবর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচ নেতা হলেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুনুর রশিদ, নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী, সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি খুলনার সভাপতি অধ্যক্ষ দেলওয়ারা বেগম, যুগ্ম-সম্পাদক ও তেরখাদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু।
জেলা পরিষদের প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। দলীয়ভাবে যদি মনোনয়ন পাই তাহলে নির্বাচনে অংশ নেবো। প্রার্থিতার বিষয়ে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে আমি সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেবো।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘দল চাইলে প্রার্থী হবো। আর দলীয়ভাবে যদি মনোনয়ন না পাই তাহলে কোনোভাবেই প্রার্থী হবো না।’
মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী। তিনি বলেন, দল যদি মনোনয়ন দেয় তাহলে নির্বাচন করবো, অন্যথায় দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবো।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ দেলওয়ারা বেগম বলেন, ‘এরই মদ্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে ফরম জমা দিয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েই আগামী দিনে পথ চলবো।’
এখনো মনোনয়নপত্র জমা দেননি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও তেরখাদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু। তিনি বলেন, ‘দলীয়ভাবে মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে প্রার্থী হবো। আর যদি দলীয়ভাবে মনোনয়ন না পাই তাহলে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবো।’
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ আগস্ট জেলা পরিষদের নির্বাচন-২০২২ এর তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার থাকবেন জেলা প্রশাসক। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ১৫ সেপ্টেম্বর। যাচাই-বাছাই ১৮ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর। ভোটগ্রহণ ১৭ অক্টোবর। তবে এবারের নির্বাচনে খুলনার একটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
জেলা পরিষদের এ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯৭৮ জন। তাদের ভোটে একজন চেয়ারম্যান, ৯ জন সাধারণ সদস্য এবং তিনজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবেন।
এরআগে গত ২৩ আগস্ট তিন পার্বত্য জেলা বাদ দিয়ে ৬১ জেলা পরিষদে ভোটের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এতে সারাদেশের ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত ৬৩ হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধি ভোট দেবেন।