November 26, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

খুলনা জেলা ও নগর আ’লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসছেন একঝাঁক নতুন মুখ

জয়নাল ফরাজী
খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসছেন একঝাঁক নতুন মুখ। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে নগর আওয়ামী লীগের কমিটি। আর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে ঠাঁই হচ্ছে ত্যাগী-দুর্দিনের নেতাদের। একই সাথে এবার মূল্যায়ন করা হচ্ছে সাবেক ছাত্র ও যুবলীগ নেতাদের। কমিটি নিয়ে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক একমত হলেও জেলায় সৃষ্টি হয়েছে বিরোধ। দুটি আলাদা কমিটি নিয়ে ঢাকায় গেছেন জেলা ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় তাদের মধ্যে বৈঠক হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত একমতে পৌছাতে পারেননি তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককে সভাপতি ও এমডিএ বাবুল রানাকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর কমিটি এবং শেখ হারুনুর রশীদকে সভাপতি ও এ্যাড. সুজিত অধিকারীকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা কমিটি গঠন করা হয়। একই সাথে দ্রুত তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। চলতি মাসের শুরুতে দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মূলত কেন্দ্রের নির্দেশনার পরেই কমিটি গঠনের তৎপরতা শুরু হয়।
কেন্দ্রের ঘোষণার পর কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কমিটিতে প্রবীণদের পাশাপাশি নবীনদেরও আনা হয়েছে। নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এবং সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা যৌথভাবে ৭৫ সদস্যের এই কমিটি তৈরি করেছেন। দুই নেতা একমত থাকায় কমিটি গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই তা অনুমোদনের জন্য দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উত্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা জানান, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সৈনিকদের বাছাই করা হয়েছে। আমি এবং সভাপতি মহোদয় মিলেই ৭৫ সদস্যের কমিটি করেছি। ত্যাগী-দুর্দিনের নেতাদের বাছাই করে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি করা হয়েছে। অনুমোদনের পরে সবার নাম প্রকাশ করা হবে।’
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। কমিটি গঠন নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী প্রকাশ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন। পৃথক দুটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন এই দুই নেতা। মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় নেতা বিএম মোজাম্মেল হক এর মধ্যস্থতায় বৈঠক হলে কয়েকটি পদের বিষয়ে একমতে পৌছান তারা। পরবর্তীতে বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় নেতা বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এর উপস্থিতিতে শেখ হারুনুর রশীদ ও এ্যাড. সুজিত অধিকারীর বৈঠকের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে বাকি পদগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে পৃথক ওই দুই কমিটিতেই প্রবীণদের পাশাপাশি নবীন অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে সাবেক ছাত্র ও যুবলীগের বেশ কয়েকজন ঠাঁই পাচ্ছেন ওই কমিটিতে। এদিকে ঐক্যমতে পৌছাতে না পারায় এখন পর্যন্ত জেলা ইউনিটের ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারীর সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন বলে একাধিক সূত্র জানায়।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *