খুলনা ওয়াসার এমডির দুর্নীতি ও নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট
খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এমাদুল হক বশির এ রিট করেন। এতে তাকে বারবার ওয়াসার এমডি নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
রিটে স্থানীয় সরকার সচিব, পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি), জনপ্রশাসন সচিব, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও খুলনা ওয়াসা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী এমাদুল হক বশির বলেন, ওয়াসার এমডি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার পর নিজে তার বিষয়ে নিজেই বিজ্ঞপ্তি দেন। নিজেকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেন। মাসে আড়াই লাখ টাকা ভাতা তোলেন। এটাকে ওয়াসার নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, খুলনার পানিতে লবণাক্ততা রয়েছে। এ সমস্যা দূর করতে আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে ওয়াসা। অথচ পানির লবণাক্ততা দূর করার কোনো খবর নেই। এছাড়া তার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে চাকরি বা কাজের নামে সযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছেন। এসব দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে রিট করেছি।
রিটকারী এ আইনজীবী জানান, হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে। বিভিন্ন পত্রিকায় খুলনা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহর দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহর নিজ নামে যত না অর্থ-সম্পদ রয়েছে, এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি তিনি গচ্ছিত রেখেছেন স্ত্রী, সন্তান ও ভাইসহ নিকট আত্মীয়দের নামে। এসব অর্থ-সম্পদের খোঁজ শুরু করেছে দুদক।
আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলা পরিষদের গেস্ট হাউজের একটি কক্ষ প্রায় ১০ বছর ধরে দখল করে আছেন খুলনা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ। দুই শয্যার কক্ষটির ভাড়া মাসে ছয় হাজার টাকা। কিন্তু তিনি দেন তিন হাজার টাকা। অথচ ওয়াসায় নিয়োগের চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৪১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া উত্তোলন করেন তিনি।
ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর ওয়াসার এমডি হিসেবে তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ। এরপর তিনি পুনর্নিয়োগ পেয়েছেন। নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৪১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়াসহ মোট দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা সম্মানী পান ওয়াসার এমডি। এর মধ্যে আয়কর ও অন্যান্য সরকারি খরচ বাদ দিয়ে তিনি দুই লাখ ১৬ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের অক্টোবর মাস থেকে জেলা পরিষদের গেস্ট হাউজ ‘রূপসা’র দ্বিতীয় তলার এক নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেন প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ। ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর ২ নম্বর সাধারণ কক্ষে চলে আসেন তিনি। সেই থেকে এখনও কক্ষটি ব্যবহার করছেন তিনি।