December 22, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

খুলনায় ৪.৮২ একর জমিতে নির্মিত হচ্ছে ‘বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল’

জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন * শীঘ্রই নির্মাণকাজ শুরু

 

জয়নাল ফরাজী

অবশেষে খুলনায় নির্মিত হতে যাচ্ছে দুইশ’ শয্যা বিশিষ্ট বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিশু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্র“তির প্রায় আট বছর পর এর জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। অতিশীঘ্রই এর নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার কৃঞ্চনগর মৌজায় রূপসা বাইপাস সড়কের পাশে এবং কেডিএ’র বাইপাস সড়কের (সোনাডাঙ্গা থানা-জয়বাংলা মোড়) দক্ষিণ পাশে ৪.৮২ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই হাসপাতাল। এ লক্ষ্যে গতকাল রবিবার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এর নির্দেশে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) এর তত্ত¡াবধানে জেলা প্রশাসন খুলনার পক্ষ হতে অধিগ্রহণকৃত জমি প্রত্যাশী সংস্থার অনুকূলে সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আব্দুর রাজ্জাক এর নিকট জমির দখল হস্তান্তর করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনায় একটি বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল নির্মাণের প্রতিশ্র“তি দেন। এ প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী ২০১২ সালে হাসপাতালটি নির্মাণের জন্য জায়গা খোঁজা শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ। তবে জায়গা নির্ধারণ নিয়ে দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি। প্রথমে খুলনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (মন্নুজান স্কুল) ও লোকষ্ট কলোনীর সামনের খালি জায়গায় উদ্যোগ নেয়া হলেও বিভাগীয় সার্কিট নির্মাণে নির্দিষ্ট থাকায় সেটি বাতিল হয়। পরবর্তীতে সোনাডাঙ্গা সিটি বাইপাস সড়ক সংলগ্ন ময়ূরী আবাসিক এলাকা ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী স্থানের প্রায় পাঁচ একর জমিতে সরকারি শিশু হাসপাতাল নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করে গণপূর্ত বিভাগ।

সূত্রটি আরও জানায়, খুলনার জেলা প্রশাসনের এল এ শাখা এ জমি অধিগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ সর্বমোট ৫২ কোটি দু’লাখ নির্ধারণ করেছে। যা জেলা প্রশাসকও ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন। এজন্য উক্ত টাকা নির্ধারিত ১২০ কার্য দিবসের মধ্যে এল এ (সাঃ) ২/২০১৮-১৯ নম্বর কেসের বিপরীতে খুলনা জেলা প্রশাসকের বরাবর ডিডি অথবা চেকের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়। তবে জমি অধিগ্রহণের নির্ধারিত অর্থ ছাড় দিতে বিলম্ব হওয়ায় শংকা জাগে খুলনার মানুষের বহুল প্রত্যাশিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে। এক পর্যায়ে সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আব্দুর রাজ্জাক প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্র“ত এই অতিগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য সচিবের কাছে একাধিক চিঠি দেন। সর্বশেষ জমি অর্থের অভাবে বাতিল হতে পারে এই প্রকল্প বলে তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়ে পত্র দেন। অবশেষে নানান জটিলতার পরে গত ১১ জুন (মঙ্গলবার) জমি অধিগ্রহণের ৫২ কোটি টাকার চেক পেয়েছে জেলা প্রশাসন। ফলে চলতি মাসে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করা হয় এবং গতকাল রবিবার জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ অঞ্চলে একটি বিভাগীয় শিশু হাসপাতালের প্রতিশ্র“তি প্রধানমন্ত্রী নিজে খুলনার মানুষের কাছে দিয়েছেন। জায়গা নির্ধারণ নিয়ে প্রথমে কিছু জটিলতা থাকলে সবার আন্তরিকতায় অবশেষে অর্থছাড় দিয়েছে মন্ত্রণালয়। খুলনায় ২০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খুলনা বিভাগে শিশু ও নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাসের পাশাপাশি বিভিন্ন জটিল রোগের উন্নতমানের সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *